নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএসটিআইতে আরো ৮৯ ল্যাবরেটরি চালু
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বিএসটিআইকে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হচ্ছে। বিএসটিআই সক্ষমতার দিক থেকে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। বিএসটিআই পণ্যের মান প্রণয়ন, পরীক্ষণ, মান সনদ প্রদান, সঠিক ওজন ও পরিমাপের নিশ্চয়তা বিধান, ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস সনদ প্রদানের পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য এরই মধ্যে হালাল সার্টিফিকেট প্রদান শুরু করেছে। এ কার্যক্রম রপ্তানি বাণিজ্যে বিশাল ভূমিকা রাখবে। পণ্য পরীক্ষণ এবং ওজন ও পরিমাপের ক্ষেত্রে বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করতে বিএসটিআইতে আরো অত্যাধুনিক ৮৯টি ল্যাবরেটরি স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান। গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিএসটিআই প্রধান কার্যালয়ের বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস উপলক্ষে বিএসটিআই আয়োজিত ‘Metrology in the Digital Era’ অর্থাৎ ‘ডিজিটিাল যুগে পরিমাপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএসটিআইর মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. মো. নজরুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এবং এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিচালক (মেট্রোলজি) প্রকৌ. মো. সাজ্জাদুল বারী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিএসটিআইর কাউন্সিলের সদস্য, মান প্রণয়নে বিশেষজ্ঞ, শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, স্টেকহোল্ডার ও সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
বিএসটিআইর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কের কথা স্মরণ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৪ সালে বিএসটিআই আন্তর্জাতিক মান সংস্থা-আইএসওর সদস্যভুক্ত হয় এবং ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ Codex Alimentarius Commission (CAC)-এর ন্যাশনাল কোডেক্স কনট্যাক্ট পয়েন্ট (এনসিসিপি)-এর সদস্যপদ লাভ করে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই একটি শক্তিশালী ও আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করার উপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। বিএসটিআইর টেস্ট রিপোর্ট যাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য হয় সে লক্ষ্যে সরকার ও বিএসটিআই কাজ করে যাচ্ছে। পণ্য উৎপাদনে পরিমাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হন সেজন্য লেনদেনের ক্ষেত্রে কাঙ্খিত মান ও সঠিক পরিমাপের পণ্য নিশ্চিত করতে হবে। শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, পণ্যের মান প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিম্নমানের পণ্য উৎপাদন-সরবরাহ এবং ওজনে কারচুপি রোধকল্পে বিএসটিআই নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ও সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে লাইসেন্সবিহীন, নকল পণ্য উৎপাদনকারী ও পরিমাপে কারচুপিকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা সতর্ক হচ্ছে এবং জনগণ সঠিক ওজন ও পরিমাপে পণ্য পাচ্ছেন। এছাড়া বিএসটিআইর ল্যাবরেটরিতে রপ্তানিমুখী গার্মেন্ট শিল্প, ঔষধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত ওজন ও পরিমাপক যন্ত্র ক্যালিব্রেশন সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
শিল্প সচিব বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে বিএসটিআইর কার্যক্রমকে অটোমেশনের আওতায় আনার জন্য এরই মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিএসটিআইর মানচিহ্ন ও লাইসেন্সের অনৈতিক ব্যবহার রোধকল্পে ওয়েববেইজড কিউআর কোড সংবলিত সফটওয়্যার প্রবর্তন করতে যাচ্ছে। ফলে ভোক্তাসাধারণ মোবাইল ফোনে অ্যাপসের মাধ্যমে পণ্যের অনুকূলে প্রদত্ত বিএসটিআই লাইসেন্স, সার্টিফিকেট ও আমদানি ছাড়পত্রের সঠিকতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন। এছাড়া এ সফটওয়্যার ব্যবহার করে গ্রাহকরা ওজন ও পরিমাপ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম যথা- মোড়কজাত পণ্যের নিবন্ধন, ক্যালিব্রেশন সনদ ও ভেরিফিকেশন সনদের তথ্য সহজে যাচাই করতে পারবেন।
প্রতিটি স্থল বন্দরে বিএসটিআইর অফিস স্থাপনের প্রস্তাব করে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যেসব স্থল বন্দর রয়েছে তার প্রতিটি স্থল বন্দরে বিএসটিআইর ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হলে আমদানি-রপ্তানি অনেক গতিশীল হবে।
"