নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ মে, ২০২২

এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা

ইলেকট্রনিকস পণ্য রপ্তানি বাড়াতে নীতমালা জরুরি

তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে বৈশ্বিক বাজারে ইলেকট্রনিকস পণ্যের সম্ভাবনা ব্যাপক। বাংলাদেশ একসময় এসব পণ্যের আমদানিনির্ভর ছিল। এখন প্রায় ৮০ শতাংশই দেশে তৈরি হয়। দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের রপ্তানিও বাড়ছে। কিন্তু পোশাক, চামড়াসহ প্রায় সব খাতে নীতিমালা থাকলেও ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস খাতের উন্নয়নে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতমালা নেই। এজন্য নীতিমালা করার পাশাপাশি মানসম্মত পণ্য তৈরি করে বৈশ্বিক বাজার ধরার তাগিদ দিচ্ছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা থেকে গতকাল এ তাগিদ দেওয়া হয়। এফবিসিসিআই কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ‘ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস মার্চেন্ডাইজ’ শীর্ষক এ সভায় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনসহ সংগঠনটির নেতা ও খাতসংশ্লিষ্টরা।

সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এক সময় ইলেকট্রিক্যাল পণ্য আমদানি করতে হতো আমাদের। এখন প্রায় ৮০ শতাংশই দেশে তৈরি হয়। ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস খাতের প্রসারের জন্য কমপ্লায়েন্স একটি বড় ইস্যু। মানসম্মত পণ্য তৈরি করতে পারলে বিশ্ববাজারে ইলেকট্রিক্যাল পণ্যের বাজার ধরা সম্ভব।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ছোট-বড় সব কোম্পানিই দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। ছোট ব্যবসায়ীদের টিকিয়ে রাখতে সরকারও যথেষ্ট নিরাপত্তা দিচ্ছে। তাদের জন্য নীতিমালা তৈরিতে সহযোগিতা করতে হবে আমাদের। শুধু নিজস্ব ব্যবসার উন্নতি হিসাব না করে পুরো খাতের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। এ সময় ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ প্রতিষ্ঠায় জোর দিতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ইলেকট্রিক্যালসহ যেসব খাতের পণ্য দেশের বাইরে রপ্তানি করে রাজস্ব আয় করা সম্ভব, সেসব খাতকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে।

এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি ও কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ এম এ রাজ্জাক খান রাজ বলেন, গার্মেন্ট, চামড়াসহ প্রায় সব খাতে নীতিমালা থাকলেও ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস খাতের উন্নয়নে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতমালা নেই। ফলে দেশের অল্প কিছু কোম্পানি ছাড়া বেশির ভাগই মন্দা অবস্থায় আছে। ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে তারা ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হবে। ফলে ব্যাংক ও উদ্যোক্তা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রস্তুতকারক সমিতির সভাপতি ও কমিটির কো-চেয়ারম্যান মো. সোহেল খান সরকারের কাছে এ খাতে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের সুবিধাসহ টেলিভিশন প্রস্তুতে আলাদা শিল্পাঞ্চলের দাবি জানান।

এফবিসিসিআইয়ের প্যানেল উপদেষ্টা ও কমিটির কো-চেয়ারম্যান ড. কাজী ইকবাল জানান, গবেষণা ও যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত না থাকার কারণে বাংলাদেশে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস খাতের লক্ষণীয় প্রসার হচ্ছে না। এ খাতের উন্নয়নে সামগ্রিক ম্যাপিং করে কাজ করা দরকার।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক ও কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোহাব্বাত উল্লাহ তার বক্তব্যে ইলেকট্রনিকস খাতে তথ্য-উপাত্তের ঘাটতির বিষয়টি উল্লেখ করেন। এজন্য তিনি নিজ উদ্যোগে এ খাতের ডাটাব্যাংক তৈরি করে এফবিসিসিআইয়ের মাধ্যমে সরকারের কাছে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানান।

সভায় নিরাপত্তা সরঞ্জাম তৈরিতে সরকারের প্রণোদনা পাওয়া, সরকারি প্রকল্পে দেশীয় কেবলের ব্যবহার বাড়ানো, দুবাই বা আফ্রিকায় ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের হাব তৈরি করা, এ খাতে সরকারের ১৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন কমিটির অন্য সদস্যরা। সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি এম এ মোমেন, মো. আমিন হেলালী, পরিচালক হাফেজ হারুন, সাবেক পরিচালক খন্দকার রুহুল আমীন, কমিটির কো-চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান ও সালাউদ্দিন ইউসুফ এবং এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মোহাম্মাদ মাহফুজুল হক প্রমুখ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close