নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ মে, ২০২২

শেয়ারবাজার

দরপতনের ধারা থেকে বের হতে পারছে না

অব্যাহত দরপতনের ধারা থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। ঈদের আগের ধারাবাহিকতায় ঈদের ছুটির পর প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসই-এক্স প্রায় ১৩ পয়েন্ট কমে যায়। শুধু তাই নয়, গত সপ্তাহের শেষ তিন কার্যদিবস দরপতনের মধ্য দিয়ে পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। এতে গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধন প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা কমেছে। বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচকও। বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রির চাপে লেনদেন হয়েছে। এ দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ৮১ পয়েন্ট। বাজারের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের প্রথম দুদিন সূচক বৃদ্ধির পর মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা পতন হয়েছে। এই দরপতনে আবারও অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া ইস্যু ও শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি দেউলিয়ার ঘটনায় দেশের পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। গত দুই থেকে তিন বছর ধরে বন্ধ থাকা বিও অ্যাকাউন্ট থেকেও শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে। আর বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশের বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ কারণে অব্যাহতভাবে দরপতন হচ্ছে। এদিকে ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া এক বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব থেকে বড় অঙ্কের শেয়ার বিক্রির ঘটনায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউসের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চেয়েছে। জানা গেছে, ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ হাউসে রক্ষিত একটি বিও হিসাব থেকে গত বুধবার ১২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা সমমূল্যের তিনটি কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করা হয়। কোম্পানি তিনটি হচ্ছে গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি বা বিএটিবিসি। এদিকে বিদেশ সফরের নিষেধাজ্ঞার জেরে কাতারে বিনিয়োগ সম্মেলন স্থগিত করেছে বিএসইসি।

প্রসঙ্গত, শেয়ারবাজার চাঙা করতে ও প্রবাসীদের বিনিয়োগ আনতে গত বছর থেকে ধারাবাহিকভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করে আসছিল বিএসইসি। এরই মধ্যে দুবাই, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ডে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩১ হাজার ১২ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ কমেছে। অর্থাৎ বাজার মূলধন কমেছে মানে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ কমে গেছে। বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১২৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২২৭টির। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স কমেছে ৯০ দশমিক ২০ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৬ দশমিক ৭০ পয়েন্ট।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close