নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৭ জানুয়ারি, ২০২২

গোল্ড ব্যাংক পলিসির দাবি

দেশে গোল্ড এক্সচেঞ্জ পলিসি ও গোল্ড ব্যাংক দরকার বলে মনে করছেন জুয়েলারি খাতের ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে গোল্ড রিফাইনারি স্থাপনসহ স্বর্ণ রপ্তানির দিকেও নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) নতুন কার্যালয় উদ্বোধনের সময় এমন মন্তব্য করেন দেশের স্বর্ণ খাত-সংশ্লিষ্টরা।

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির নতুন কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। এতে সভাপতিত্ব করেন বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর। সঞ্চালনা করেন বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগারওয়ালা।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা গোল্ড ব্যাংক দরকার। দারুণ একটা আইকনিক চিন্তা থেকে এটা এসেছে। এটা ঠিক যে বাংলাদেশের যারা স্বর্ণকার, তাদের হাতের কাজ অনেক সুন্দর। একসময় মসলিন যেমন বিখ্যাত ছিল। এ একটা শিল্পে সত্যিকারের ভ্যালু অ্যাডেড অনেক বেশি টাকা। অল্প একটু সোনা গেলেই তো লাখ লাখ টাকা। ভ্যালু অ্যাডেড জিনিস আছে এটাতে আমাদের নজর দেওয়া দরকার। অসংখ্য হাতের কাজ করা মানুষ রয়েছে। যারা শত শত বছর ধরে উত্তরাধিকার সূত্রে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। আমাদের ভালো একটা সুযোগ রয়েছে।’

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘আমি মনে করি দেশের ঘরে ঘরে গোল্ড রিফাইনারি হবে। ইটস এ প্রেস্টিজ। আমি মনে করি গোল্ড রিফাইনারি যুগান্তকারী। বাংলাদেশের স্বর্ণশিল্পীরা পৃথিবীর মধ্যে বিখ্যাত। পুরো ভারতবর্ষে বাংলাদেশের স্বর্ণশিল্পীরা কাজ করেন। আমাদের জুয়েলারি শিল্প দিয়ে গার্মেন্টশিল্পকে ছাড়িয়ে যেতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যদি শুধু চায়না ও ইউরোপে রপ্তানি করি, আমাদের টাকা রাখার জায়গা থাকবে না। গার্মেন্টের দাম কম, স্বর্ণের প্রচুর দাম। এটার ভ্যালু এডিশন প্রচুর। কিছু স্বর্ণের ভ্যালু এডিশন ৩০, ৪০ ও ৫০ শতাংশ। যেখানে আমাদের গার্মেন্টের ভ্যালু এডিশন ৫, ৭ ও ৮ শতাংশ।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি বলছে বাংলাদেশে গোল্ড এক্সচেঞ্জ দরকার, গোল্ড ব্যাংক দরকার। সবকিছুর ব্যাংক রয়েছে। দেশে গোল্ড ব্যাংক এবং গোল্ড এক্সচেঞ্জও দরকার।

বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, জুয়েলারি শিল্পে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি যৌথ মিটিংয়ের প্রয়োজন। একটা সময় মানুষ স্বর্ণ বন্ধক রেখে ঋণ নিতে পারত। ১৯৮০ সাল থেকে এ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। আমি মনে করি এটার জন্য ভালো একটা পলিসি দরকার।

তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব বাজুসের মাধ্যমে একটি গোল্ড ব্যাংক বা গোল্ড এক্সচেঞ্জ পলিসি করা হোক। আজকে পত্রিকা খুললেই দেখা যায়, স্বর্ণ চোরাচালান ও পাচার হচ্ছে। এগুলো আসলে কতটুকু সত্য। সত্যটা হয়তো আমরা আসলেই লুকিয়ে গেছি। লুকিয়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে আমাদের পরিকল্পিত কোনো নির্দেশনা নেই। নির্দেশনার জন্য একটি ইনস্টিটিউট দরকার। যেখানে প্রতিদিন দাম নির্ধারণ হবে। গোল্ড ব্যাংক দরকার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা দরকার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহায়তা দরকার। বাজুস প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, সবাই আস্তে আস্তে জুয়েলারি ফ্যাক্টরির দিকে নজর দেন। আমরা শুধু আমদানি করব কেন? আমাদের রপ্তানির দিকে যেতে হবে। আমরা আশা করব আপনারা সবাই একটা একটা করে ইন্ডাস্ট্রি করার পরিকল্পনা করেন। আমদানির চিন্তা না করে রপ্তানি করে দেশকে সমৃদ্ধিশালী করেন। বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলিপ আগারওয়ালা বলেন, বাজুসের প্রধান কার্যালটি ছিল ৫০০ বর্গফুটের। আজ তার আয়তন ১০ হাজার বর্গফুট।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close