নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ জানুয়ারি, ২০২২

অ্যাপের মাধ্যমে ঋণ পাচ্ছেন গার্মেন্টকর্মীরা

ব্যাংকঋণ পেতে অনুসরণ করতে হয় দীর্ঘ প্রক্রিয়া। প্রয়োজন পড়ে জামানতের। জমা দিতে হয় প্রয়োজনীয় নথিপত্র, যা বেশ সময়সাপেক্ষ। আবার এসব প্রক্রিয়া মেনেও গার্মেন্টকর্মীসহ ব্লু-কলার কাজে নিয়োজিতদের ঋণ পেতে পোহাতে হয় অনেক ঝক্কিঝামেলা। এমন প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা এসব কর্মীর জন্য সহজেই ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করেছে বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড। জামানত ছাড়াই ব্লু-কলারে নিয়োজিত কর্মীদের জন্য ঋণ সুবিধা চালু করেছে ব্যাংকটি। ডিজিটাল ন্যানো লোন প্ল্যাটফরম ‘প্রাইম অগ্রিম’ অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই তাৎক্ষণিক আবেদন ও ঋণ পাওয়া যাবে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে গার্মেন্ট কর্মীদের মাঝে এ ঋণ দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য খাতে নিয়োজিত কর্মীদেরও এ ঋণের আওতায় আনবে বেসরকারি খাতের দ্বিতীয় প্রজন্মের ব্যাংকটি।

জানা গেছে, প্রকল্পটি চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজারেরও বেশি গার্মেন্ট কর্মীর মাঝে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট বেতন পরিসীমার আওতায় গার্মেন্ট কর্মীরা এ ঋণ পাচ্ছেন। যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে এ ঋণ সুবিধা পাওয়া যায় বলে এটি এ খাতের কর্মীদের মাঝে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ঋণের সুবিধাভোগীদের একজন রাসেল হোসেন। অনন্ত কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানে সেলাই অপারেটর হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করছেন তিনি। বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দুশ্চিন্তায় পড়েন রাসেল। বাবার চিকিৎসার ব্যয় মেটানো নিয়ে উদ্বিগ্ন রাসেল এক সহকর্মীর মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংকের এ ঋণ সুবিধার বিষয়টি জানতে পারেন। সুমাইয়া নামের ওই সহকর্মী কীভাবে ছোট ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ মেটানোর জন্য প্রাইম অগ্রিমের মাধ্যমে ঋণ সুবিধা পেয়েছিলেন, সেই অভিজ্ঞতা জানান রাসেলকে। বিষয়টি জানার পর অ্যাপের মাধ্যমে ঋণের জন্য আবেদন করেন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে কাক্সিক্ষত ঋণ পেয়ে স্বস্তি ফেরে তার। বাবার চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর পর এখন সহজেই বেতনের টাকায় ঋণ পরিশোধ করছেন রাসেল। অ্যাপের মাধ্যমেই রাখতে পারছেন নিজের হিসাবও।

রাসেলের মতো জরুরি প্রয়োজনের মুখোমুখি হওয়া এমন হাজারো গার্মেন্ট কর্মীর মুখে হাসি ফুটিয়েছে প্রাইম অগ্রিম। নির্দিষ্ট বেতন পরিসীমাসহ যেকোনো কর্মী বেতনের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। এ অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহক কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আবেদন ও ঋণ পেতে সক্ষম। বিশেষ প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা দেওয়ার অংশ হিসেবে এ পরিষেবাটি সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা কার্যকর থাকবে। ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতানুগতিক পদ্ধতিতে ঋণ পাওয়া সময়সাপেক্ষ। বিপরীতে প্রাইম অগ্রিম দীর্ঘ ঋণ প্রক্রিয়ার ঝামেলা দূর করে। ডিজিটাল ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে গ্রাহক এ ঋণ পেতে পারেন। প্রাইম ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের অংশ হিসেবে অ্যাপের মাধ্যমে ব্যাংকিং পরিষেবার বাইরের জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ রূপান্তরে একটি বড় মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলে মত তাদের।

প্রাইম অগ্রিম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), মেশিন লার্নিং এবং বিকল্প ক্রেডিট নিরীক্ষণ ব্যবস্থাসম্পন্ন একটি ডিজিটাল ন্যানো ফাইন্যান্সিং প্ল্যাটফরম, যা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ঋণ অনুমোদনে সক্ষম। গত বছরের ৮ নভেম্বর অনন্ত কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে আরএমজি সেক্টরে এ পাইলট প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করে প্রাইম ব্যাংক। এরই মধ্যে সেবাটি সব মহলে মনোযোগ আকর্ষিত হয়েছে। এ উদ্ভাবনী উদ্যোগের জন্য এরই মধ্যে মর্যাদাপূর্ণ ইএফএমএ-অ্যাকসেনচার ব্যাংকিং ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২১-এ ব্রোঞ্জ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে প্রাইম ব্যাংক। আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল সার্কিটে অ্যানালিটিকস ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বিভাগে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close