বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
বেনাপোলে ঢোকেনি আমদানি পণ্য
পরিচয় কার্ড নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে সমস্যা
আমদানি-রপ্তানিকাজে নিয়োজিত পরিচয় কার্ডবিহীন ট্রান্সপোর্ট এবং সিঅ্যান্ডএফ সদস্যদের ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ঢুকতে দেয়নি সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ কারণে গতকাল সোমবার সকাল থেকে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের বেনাপোলে পণ্য আমদানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ওপারের পেট্রাপোলে রপ্তানি কার্যক্রম চলছে। এ ধরনের একই সমস্যার কারণে গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভারত থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেনি। এ ধরনের সমস্যায় এ পথে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ভারতের বনগাঁ গুডস ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বুদ্ধদেব বিশ্বাস জানান, ‘এত দিন আমরা সংগঠনের পরিচয়পত্র নিয়ে পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানির কাজ করে আসছিলাম। গত শনিবার পেট্রাপোল বিএসএফ থেকে বলা হয় ভারতীয় কাস্টমস, বন্দর, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ও ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ স্বাক্ষরের পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে বন্দর এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এ কারণে গত শনিবার সকালে বন্ধ থাকে আমদানি-রপ্তানি। পরে এক বৈঠকে আলোচনার পর আবার চালু হয় আমদানি-রপ্তানি। আমরা সময় চাইলে বিএসএফ সোমবার পর্যন্ত সময় দেন। দুদিনের মধ্যে ৪টি সংস্থা থেকে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করা কঠিন। সে কারণে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি পণ্য পাঠানোর কাজ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর উপায় নেই।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, হঠাৎ করে পেট্রাপোল বন্দরে নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিএসএফ সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেয় কার্ডবিহীন কোনো ভারতীয় ট্রান্সপোর্ট ও সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ বন্দরে প্রবেশ করবে না। এতে কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা বিঘœ ঘটায় শনিবার ৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকে ভারত থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। পরে বিএসএফ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ সদস্যদের সমঝোতা বৈঠকে ৮ ঘণ্টা পর বিকাল ৪টায় ফের বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে বাণিজ্য স্বাভাবিক হয়। আবারও একই দাবিতে আজ রপ্তানির কাজ বন্ধ করে দেন ভারতীয় ট্রান্সপোর্ট শ্রমিকরা।
প্রতিদিন ভারত থেকে ৩৫০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি এবং ১৫০ ট্রাকে পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়ে থাকে। প্রতিদিন আমদানি পণ্য থেকে সরকারের ২০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা পর্যন্ত রাজস্ব আয় হয়। যাত্রী যাতায়াত হয় দিনে ৬০০ জনের মতো। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যে বাংলাদেশ বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত সচল রাখার চেষ্টা করলেও ভারতীয়রা একের পর এক নানা সমস্যা সৃষ্টি করে বাণিজ্য বন্ধ করে দিচ্ছে। এমনিতে বনগাঁ পৌর পার্কিংয়ে এক একটি ট্রাক এক মাসেরও অধিক সময় আটকে রাখা হচ্ছে। তার পরও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে অচলাবস্থা সৃষ্টিতে বাণিজ্যে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। এসব কারণে ব্যবসায়ীরা এ বন্দর থেকে মুখ ঘুরিয়ে অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছে।
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক আবদুল জলিল এ ব্যাপারে বলেন, ‘এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমাদের এখানে কোনো হাত নেই। তার পরও আমদানি-রপ্তানি সচল রাখতে আমরা ভারতীয় বন্দর পেট্রাপোলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি।’
"