নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ নভেম্বর, ২০২১

এফআইসিসিআইয়ের আলোচনা সভায় বক্তারা

প্রবৃদ্ধির হাতিয়ার হবে কৃষি ডিজিটাল অর্থনীতি

আগামী অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির মূল হাতিয়ার হবে সম্ভাবনাময় তিন খাত। এগুলো হলো কৃষি ব্যবসা, ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ অর্থায়ন। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বৈশ্বিক ও দেশীয় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে এ তিন খাতে জোর দিতে হবে। বাংলাদেশের বৈচিত্র্যের প্রয়োজনীয়তা, জাতীয় অগ্রাধিকার এবং বেসরকারি খাতের শক্তিকে ভিত্তি হিসেবে বেছে নিতে হলে এসব খাতকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এগিয়ে নিতে হবে।

গতকাল ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) ‘সমৃদ্ধি ও অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এফআইসিসিআইয়ের সভাপতি রুপালী চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগসংক্রান্ত উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। আলোচনায় অংশ নেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির, এইচএসবিসি বাংলাদেশের সিইও মাহবুব উর রহমান। আলোচনায় আরো অংশ নেন জাপানের রাষ্ট্রদূত ইটো নাওকি, নেদারল্যান্ডসের সহকারী মিশন প্রধান পাউলা রোজ স্কিনডিলার, কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাংক কেনু এবং অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের এমডি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। এফআইসিসিআইয়ের তথ্য মতে, বাংলাদেশের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্য দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং শক্তিশালী বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য আনতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগ ছয় গুণ, রপ্তানি ৬৬ শতাংশ এবং জিডিপিতে বেসরকারি বিনিয়োগ ১৫ শতাংশ বাড়বে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ ও রাজস্ব সংহতি বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যসহ কিছু খাতে আরো উন্নতি করতে হবে। সফল দেশগুলোর উদাহরণ, নীতি ও বাজার কার্যক্রমের আলোকে এসব বাজারে অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করাই হলো মুখ্য উদ্দেশ্য, যা রপ্তানি বাজারের জন্য শক্তিশালী ও উন্নত করা যায়। বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা এবং সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য থ্রি গ্রোথ ড্রাইভার্সকে কাজে লাগাতে চায় এফআইসিসিআই। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমরা বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করেছি। এখন যে কেউ বিনিয়োগের জন্য আসতে পারে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার মাধ্যমে বাংলাদেশের সক্ষমতাও প্রমাণিত হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসহ মেগা প্রকল্পগুলো আগামীর বদলে যাওয়া বাংলাদেশের চিত্র। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে রুপালী চৌধুরী জানান, এফআইসিসিআই সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজস্বের ৩০ শতাংশ এ সংস্থার সদস্যরা জোগান দিচ্ছেন। যেটি দেশে বিদেশি বিনিয়োগের ৯০ শতাংশ। এছাড়া এ সংগঠনের সদস্যরা ১ লাখ ৫৬ হাজার মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। করোনা মহামারির সময়ে করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) হিসেবে ১ হাজার ৪২ মিলিয়ন টাকা সহায়তা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উন্নতির পেছনে বেসরকারি খাতের সংযুক্ততা বৃদ্ধি, রেমিট্যান্স, অর্থনৈতিক উদারনীতি, বাণিজ্য একীভূতকরণের মতো নানা কারণ জড়িত। এ অর্জনের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়া। তবে এর জন্য উচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ কাটিয়ে ওঠা জরুরি।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত শিল্প ও বিনিয়োগসংক্রান্ত উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, বাণিজ্য সংগঠনগুলো অ্যাডভোকেসির কাজ করছে। টেকসই অর্থনীতির জন্য আমাদের নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মধ্যে কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এবং সবুজ অর্থায়নের দিকে যেতে হবে। আগামীতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যেতে হবে। এলডিসির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এফটিএসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ও উৎপাদন বাড়াতে হবে।

গতকালের অনুষ্ঠানে ‘উন্নয়নের চাবিকাঠি : কৃষি ব্যবসা, ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ অর্থায়নের মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধি করা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উন্মোচন করা হয়। পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের সহায়তায় প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close