নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ অক্টোবর, ২০২১

ব্যয় হবে ২৫০ কোটি টাকা

আইসিটি খাতে ২৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরির উদ্যোগ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে নতুন করে ২৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে চায় সরকার। এজন্য ২৫২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘শি পাওয়ার প্রকল্প : প্রযুক্তির সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন-দ্বিতীয় পর্যায়’ শীর্ষক বিনিয়োগ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন হবে বলে আশা করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর। অনুমোদন পেলে অধিদপ্তর দেশের ৪৪ জেলার ১৩০টি উপজেলায় এসব উদ্যোক্তা সৃষ্টির কাজ শুরু করবে।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে প্রকল্পটির ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিটির সভাপতি ও পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগমের সভাপতিত্বে সম্প্রতি এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে প্রকল্পটির বিষয়ে কিছু বিষয়ে স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে। এ স্পষ্টীকরণগুলো পেলেই প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।

পিইসি সভার কার্যপত্র সূত্রে জানা গেছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ২৫২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ৪০০ নারীকে ‘আইটি সার্ভিস প্রভাইডার’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়া ১০ হাজার ৪০০ নারীকে ‘উইমেন ফ্রিল্যান্সার’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, ১ হাজার ৭৫ নারীকে উইমেন কল সেন্টার এজেন্ট-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে এবং ৩ হাজার ২৫০ জন নারীকে উইমেন ই-কমার্স প্রফেশনাল বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

শুধু প্রশিক্ষণই নয়, সফল প্রশিক্ষণার্থীদের ল্যাপটপ কেনার জন্য আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণকালীন শিক্ষার্থীদের ভাতাও দেওয়া হবে। পাশাপাশি একটি একক নারী উদ্যোক্তা প্ল্যাটফরম তৈরি ও বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে পার্টনারশিপ স্থাপন, তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগে নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে ১৪০টি সেমিনার আয়োজন ও প্রচার চালানো হবে। আয়োজন করা হবে চাকরি মেলার।

প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার বিষয়ে বলা হয়, প্রকল্পটির প্রথম পর্যায় গ্রহণের আগে দেশব্যাপী সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়। প্রথম পর্যায়ে ২১টি জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অবশিষ্ট জেলাগুলো প্রস্তাবিত প্রকল্পে অর্থাৎ দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানো হবে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃক্ষের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করবে। প্রশিক্ষণ শেষে আইসিটি বিভাগ থেকে সনদ দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, এ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) প্রণয়ন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছিলাম। সেটার ওপর পিইসি সভা হয়েছে। সভায় কিছু বিষয়ে স্পষ্ট করে জানাতে বলা হয়েছে। সেগুলো নিয়ে এখন আমরা কাজ করছি। পিইসির জিজ্ঞাসা অনুযায়ী ডিপিপি পুনর্গঠন করে আগামী ৩ তারিখের মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। তারপর পরিকল্পনা কমিশন একনেকে উপস্থাপন করবে।

এ প্রকল্পের আওতায় আইসিটি খাতে ২৫ হাজার ১২৫ জন উদ্যোক্তা তৈরির জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পাঁচ মাস করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, প্রশিক্ষণের পর এক মাসের একটা মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম রেখেছি। যাতে তারা প্রশিক্ষণ বাস্তব প্রয়োগ ঘটাতে পারে। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি গাইডলাইন আছে। সে অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। এসব প্রশিক্ষণে যারা সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হবেন, সরকার তাদের একটি ল্যাপটপ কেনার জন্য ২০ হাজার করে টাকা দেবে। ল্যাপটপ কেনার জন্য বাকি টাকা সহজ শর্তে ঋণ কিংবা সম্ভব হলে প্রার্থী নিজেই পরিশোধ করবে। প্রশিক্ষণগুলো উপজেলা পর্যায়ে হবে। এছাড়া প্রশিক্ষার্থীদের কিছু পরিমাণ ভাতা দেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close