নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতিসংঘের সহায়তা চায় এফবিসিসিআই
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে দেশের বেসরকারি খাতকে যেসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে, তা মোকাবিলায় জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। বিশেষ করে দক্ষতা বৃদ্ধিতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কাছে কারিগরি সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আয়োজিত ‘নিউওয়ার্ল্ড, নিউ হোপ : জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সম্মেলনে এ সহায়তা চেয়ে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সহায়তায় জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনের সাইড লাইনে আয়োজিত এ সম্মেলনের আয়োজন করে সেন্টার ফর নন রেসিডেন্স বাংলাদেশিস।
সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহসভাপতি মো. আমিনুল হক, সহসভাপতি সালাহউদ্দিন আলমগীর, সহসভাপতি এম এ রাজ্জাক খান, চেজ পাওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ এম নাঈমুর রহমান, বায়রার সাবেক সভাপতি বেনজীর আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মো. রেজাউল করিম রেজনু, পরিচালক মোহাম্মাদ আনোয়ার সাদাত সরকার, পরিচালক তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসাইন খান, পরিচালক মোহাম্মেদ বজলুর রহমান, পরিচালক মোহাম্মদ আলী খোকন, পরিচালক শমী কায়সার, পরিচালক আলমগীর শামসুল আলামিন, পরিচালক মো. নাসের, পরিচালক নাজ ফারাহানা আহমেদ, পরিচালক সৈয়দ সাদাত আলমাস কবীর, পরিচালক মোহাম্মাদ রিয়াদ আলী, পরিচালক যশোধা জীবন দেবনাথ, টোটাল বিজনেস সলিউশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মিজানুর রহমান, আবদুল মোনেম লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) এ এস এম মহিউদ্দীন মোনেম।
সম্মেলনে অনলাইন মাধ্যমে যোগ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার, ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ইন বাংলাদেশ মিয়া সেপ্পো, ইউএনডিপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের লেফটেন্যান্ট ওয়ালসন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইনকের নেতা ও গ্রেটার নিউইয়র্ক চেম্বারের সদস্য শেকিল চৌধুরী। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, জাতিসংঘের সহযোগিতা পেলে এলডিসি-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি এসডিজি অর্জনও সহজ হবে। এ সময় তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে বাংলাদেশি শরণার্থী ও পরবর্তী সময়ে দেশে ফেরার পর তাদের পুনর্বাসনে জাতিসংঘের সহায়তা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই জাতিসংঘের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে এ সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হয়। শান্তি মিশনসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন কার্যক্রমে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি জানান, জাতিসংঘ শান্তি কমিশন ও হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল উভয়েরই প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য বাংলাদেশ।
স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে, বিশেষ করে দারিদ্র্য দূরীকরণ, টেকসই উন্নয়ন কৌশল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা, মাতৃ ও শিশু উন্নয়ন, টিকাদান, যুব উন্নয়ন, নারী ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, শিল্প উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা ও গবেষণা খাতে জাতিসংঘের অবদানের কথা উল্লেখ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
করোনা মহামারি দেশের অর্থনীতিতে কঠিন আঘাত হেনেছে জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক দিকনির্দেশনা ও নীতিকৌশলের মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্রুতই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে আছে। দারিদ্র্যবিমোচন, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমানো, গড় আয়ু বৃদ্ধি, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি, মাথাপিছু গড় আয় বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, টেকসই প্রবৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক সব সূচকে অগ্রগতি অব্যাহত রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশ এসডিজি অর্জন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। এ সময় তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণের পর বিশ্ববাজারে দেশের বেরসরকারি খাত বাড়তি কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এসব চ্যালেঞ্জ জিততে ব্যক্তি খাতের দক্ষতা বৃদ্ধিতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা কাছ থেকে কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সফর করছে।
"