বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বেনাপোল বন্দরে পণ্যজট

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের সময় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য রপ্তানি কমেছিল। তবে বেশ কিছুদিন ধরে সেটি আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গত ১৫ দিন ধরে বন্দর দিয়ে রপ্তানির পরিমাণ অন্তত ছয় গুণ বেড়েছে। এতে বেনাপোল ও পেট্রাপোলে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ পণ্যজট। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের প্রধান স্থলবন্দর হলেও সেই তুলনায় সক্ষমতা বাড়েনি বন্দরের। ফলে আমদানি-রপ্তানি বাড়লেই বন্দরের ওপর চাপ দেখা দেয়। তৈরি হয় ভয়াবহ পণ্যজট। ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা।

বন্দর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে পণ্যের ক্রয়াদেশ বাড়ছে। যে কারণে রপ্তানির পরিমাণও বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে চলতি মাস থেকে পণ্য সরবরাহে বেড়েছে। যেখানে করোনাকালে দৈনিক রপ্তানিবাহী ৫০ ট্রাক পণ্য যেত, এখন সেখানে যাচ্ছে ৩০০-৩৫০টি ট্রাক। ফলে বেনাপোলের জায়গা সংকটে এসব পণ্যবাহী ট্রাক এপারে আটকে পড়ছে। একই কারণে ওপারে পেট্রাপোল বন্দরে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে আমদানি পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে। ফলে দুই দেশের বন্দরেই দেখা দিয়েছে পণ্যজট।

বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমস সূত্র জানায়, তবে দুই বছর ধরেই বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছিল ১৮ লাখ ৫১ হাজার ২৫৭ টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য। এর মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানি হয় ৪ লাখ ১ হাজার ১৭৭ টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি হয় ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৮২৯ টন পণ্য। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৮ টন পণ্য।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, করোনাকালে রপ্তানির হার অনেক কমে যায়। গত ১০-১৫ দিন ধরে সেটি বেড়েছে। এতে উভয় বন্দরে দেখা দিয়েছে পণ্যজট। বনগাঁ পৌরসভা পার্কিংয়ে রাখা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ট্রাক থেকে চাঁদা নিচ্ছে। প্রতিদিন ছোট গাড়ি ৫০ টাকা, ছয় চাকার গাড়ি ৮০ টাকা, ১০ চাকার গাড়ি ১২০ টাকা হারে পার্কিং চার্জ আদায় করে থাকে। এতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। স্থলবন্দরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির প্রধান রুট হলেও বন্দরটি সক্ষমতায় অনেক পিছিয়ে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে এখনই গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মত তাদের। ইন্দো-বাংলা চেম্বার অব কমার্স সাব-কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান এ বিষয়ে বলেন, ভারত থেকে রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা বেড়েছে। এ কারণে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে তীব্র জটের সৃষ্টি হয়েছে। সরকারকে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। তবে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক মামুন কবীর। তিনি বলেন, রপ্তানিবাহী ট্রাকের হার বেড়ে যাওয়ার কারণে পণ্যজট সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছি। এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান বলেন, করোনাকালে বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কমে যায়। কিন্তু ১৫ দিনে ধরে রপ্তানি বেড়ে গেছে। বর্তমানে দৈনিক ৩০০-৩৫০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। এতে বন্দরে জটের সৃষ্টি হয়েছে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়লে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরো গতিশীল হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close