নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ জানুয়ারি, ২০২১

এবার উত্তরণ ঘটবে, আশা অর্থমন্ত্রীর

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে সিডিপির বৈঠক থেকে বাংলাদেশের গ্র্যাজুয়েশনের বিষয়ে ঘোষণা আসবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে অ্যাসেসমেন্ট সভা হবে। আশা করি সেই সময় আমরা এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসব এবং পরবর্তী স্তরে পৌঁছে যাব।’

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি সভা শেষে এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমরা এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন অর্জন করতে যাচ্ছি। আমরা তিনটি ক্রাইটেরিয়াই পূরণ করেছি। এবার দ্বিতীয় অ্যাসেসমেন্ট। আমরা নিচুস্তর থেকে উঁচুস্তরে উত্তরণ ঘটাতে পারব। আমি আশাবাদী যে, আমরা অর্জন করতে পারব। এটি জাতির জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। জাতির পিতার শততম জন্মবার্ষিকী এবং পাশাপাশি স্বাধীনতার ৫০ বছর। এই অর্জন জাতির পিতার প্রতি ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি উৎসর্গ করা হবে বলে,’ জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের একটি সংস্থা কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বিষয়টি দেখভাল করে। তাদের কোনো দেশের ইচ্ছার কথা জানালে তারা ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বসে। তাদের পরামর্শ মতে একটা দেশকে নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তরে নিয়ে আসা হয়। পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক সভায় ভালো ফলাফল এলে পরেই ঘোষণা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ২০১৮ সালে ভালো করেছে। এবারও ইনডেক্স ভালো। তাই বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটানোর সম্ভাবনা বেশি বলে জানান তিনি।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অ্যাসেসমেন্ট সভা হবে। আশা করি সেই সময় আমরা এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসব এবং পরবর্তী স্তরে (উন্নয়নশীল) পৌঁছে যাব।

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন নিয়ে গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করে আছি এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসব এবং গ্র্যাজুয়েশন করব, উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাব। সেটি করার জন্য কিছু ক্রাইটেরিয়া আছে, সেটি জাতিসংঘ দেখে। এজন্য প্রত্যেক দেশকে যদি ইচ্ছা পোষণ করে যে, তারা গ্র্যাজুয়েশন চায়, তারা এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসতে চায়, তাহলে তাদের জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসিকে জানাতে হয়। এরা ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বসে এবং এটি তাদের পরামর্শ অনুযায়ী একটি দেশকে আপগ্রেড করা হয়, নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তরে নিয়ে আসা হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ২০১৮ সালে এই কমিটি পর্যালোচনা সভা করেছিল। সেই সভায় এই কমিটিকে খুশি করতে কমিটির যে চাহিদা সেটি আমরা পূরণ করেছিলাম। তিনটি চাহিদা সেখানে আছে। দেশের ইকোনমিক ভারনারেবল ইনডেস্ক, হিউম্যান অ্যাসেট ইনডেক্স এবং পার ক্যাপিটা ইনকাম। তিনটি বিষয় দেখে একটি দেশকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় বলে,’ জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন, ‘তবে এটি একটি সভায় করা হয় না, এই কমিটি পরবর্তী সভায় যখন আবার বসবে, প্রথম সভায় যারা ক্রাইটেরিয়াগুলো মিট করতে পারবে এবং দ্বিতীয় সভায় যারা ক্রাইটেরিয়া মিট করতে পারে, তাদেরই গ্র্যাজুয়েশনের জন্য সিলেক্ট করা হয়। আমরা ২০১৮ সালে এই কমিটি যখন বসেছিল সে সময় আমরা আবেদন করেছিলাম এবং আমরা সেখানে অ্যাসেসমেন্ট যে তিনটি ক্রাইটেরিয়া আছে, ইকোনমিক ভারনারেবল ইনডেস্ক, হিউম্যান অ্যাসেট ইনডেক্স এবং পার ক্যাপিটা ইনকাম যেটা মিনিমাম থাকে তার চেয়ে বেশি আমাদের, সেটা পূরণ করেছিলাম। যেহেতু এটা প্রথম অ্যাসেসমেন্ট ছিল আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে দ্বিতীয় অ্যাসেসমেন্ট সভার জন্য। তৃতীয় অ্যাসেসমেন্ট সভাটি আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে হবে, সে সময় আমরা আশা করি এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসব এবং আমরা পরবর্তী যে স্তর সে স্তরে পৌঁছে যাব।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ইকোনমিক ভারনারেবিলিটি ইনডেসকের জন্য একটি দেশকে কমপক্ষে ৩২ পয়েন্ট অর্জন করতে হয়। আমরা সেখানে ২৭ পয়েন্ট অর্জন করেছি, কম আছে আমাদের। হিউম্যান অ্যাসেট ইনডেক্সে একটি দেশের ৬৬ পয়েন্ট থাকতে হবে আমাদের আছে ৬৫, আমরা এখানেও বেশি আছি এবং পার ক্যাপিটা ইনকাম একটি দেশের অ্যাট্রাক্ট ম্যাথোডে করা হয়, এবং সেই ম্যাথোডে গ্র্যাজুয়েশনের জন্য দরকার ১ হাজার ২১০ ডলার, আমাদের আছে ১ হাজার ৬৪০ ডলার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close