নিজস্ব প্রতিবেদক
মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর প্রকল্প
পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি
কক্সবাজারের মহেষখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে সমুদ্রবন্দর নির্মাণে দুই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। জাপানের নিপ্পন কোয়ে যৌথ কোম্পানি এবং জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গতকাল ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রকল্প পরিচালক জাফর আলম এবং জাপানের নিপ্পন কোয়ের প্রতিনিধি নাওকি কুডো চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
জানা যায়, নিপ্পন কোয়ে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের যাবতীয় ডিজাইন ব্যয় নির্ধারণ, টেন্ডার ডকুমেন্টস তৈরি এবং অবকাঠামোগত নির্মাণের বিষয়গুলো মনিটরিং ও তদারকি করবে। পরবর্তী সময়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ থেকে শুরু করে বন্দর চালু করে দেওয়ার বিষয়টি সমন্বয় করবে। বন্দর চালু হওয়ার এক বছর পর্যন্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় সব ধরনের সাপোর্ট দেবে। এ ক্ষেত্রে ব্যয় হবে ২৩৪ কোটি টাকা। ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্ট গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পের (বন্দর সংযোগ সড়ক অংশ) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের কার্যক্রম সংক্রান্ত পরামর্শ দেবে। এজন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটিকে ৪৬৬ কোটি টাকা দেওয়া হবে।
মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের (বন্দর সংযোগ সড়ক অংশ) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের (আরএইচডি) কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রকল্প পরিচালক মো. সাদেকুল ইসলাম এবং জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্ট গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিনিধি শুনজি ইউশিহারা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথি এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন, জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউহো হায়াকাওয়া, বাংলাদেশের জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইকি ইয়ামায়া উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে আমাদের অধিকার আরো বেশি শক্তিশালী হবে। সুনীল অর্থনীতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে মাতারবাড়ী বন্দর নতুন উচ্চমাত্রায় নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সমুদ্রসম্পদ ও বঙ্গোপসাগরের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে মাতারবাড়ী বন্দর সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। মাতারবাড়ী বন্দরের বাস্তবায়ন একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে জানান তিনি।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, মাতারবাড়ী বন্দরের প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রম ২০২৬ সালে সম্পন্ন হবে। নির্মাণসম্পন্ন হলে মাতারবাড়ী বন্দরে ১৮ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে। প্রায় ৮ হাজার টিইইউস কন্টেইনার (২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে কনটেইনার) নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারবে মাতারবাড়ী বন্দরে। ফলে সামগ্রিক পরিবহন ব্যয় কমবে আনুমানিক ১৫ শতাংশ।
"