তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

  ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

স্মার্টওয়াচ ব্যবহারের চমৎকার ৫ সুবিধা

বর্তমানে আমাদের জীবনযাত্রা প্রায় পুরোটাই প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে গেছে। আর এরই পথ ধরে আমাদের সেই চির পরিচিত হাত ঘড়িতেও এসেছে পরিবর্তন। অসাধারণ আর অবিশ্বাস্য সব ফিচারে সমৃদ্ধ হয়ে আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে স্মার্ট ওয়াচ। স্মার্ট ওয়াচ কেন ব্যবহার করবেন? আসলে যদিও এটি সেই চেনা পরিচিত ঘড়িই কিন্তু আধুনিক সব ফিচার সংযোজনের কারণে এটি একটি অনবদ্য স্মার্ট ডিভাইসে পরিণত হয়েছে। একে আপনি মোবাইল ফোনের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি এটি ছোটখাট একটি কম্পিউটারের মতো সার্ভিস দিতে পারে। এই কারণেই মূলত তরুণদের মধ্যে এই ঘড়িটি এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলুন এর চমৎকার সব সুবিধাগুলো জেনে নেই।

স্মার্টওয়াচ ব্যবহারের সুবিধা : স্মার্টওয়াচ দেখতে সাধারণ ঘড়ির মতো হলেও এটি সময় দেখানো ছাড়াও আরো অনেক সার্ভিস দেয়। অন্যান্য সাধারণ ঘড়ির চেয়ে ভিন্ন এই ডিভাইসগুলোতে রয়েছে স্মার্ট কম্পিউটিং সিস্টেম। এটি ইন্টারনেটের সঙ্গে কানেক্ট হতে পারে এবং আপনার স্মার্ট ফোনের সঙ্গে কানেক্ট হয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ফলে এই ঘড়ির মাধ্যমেই ফোন রিসিভ, মেসেজ আদান-প্রদান ও গান শোনাসহ নানাবিধ কাজ করতে পারবেন।

সময় দেখা : যেহেতু এটি একটি ওয়াচ বা ঘড়ি কাজেই ডিভাইসটির প্রাথমিক কাজ নির্ভুলভাবে সময় দেখানো। কিন্তু সময় দেখানোর স্টাইল বা আউটলুকও প্রচলিত ঘড়ি থেকে ভিন্ন। স্মার্টওয়াচগুলোতে সময় দেখানোর পাশাপাশি অসংখ্য ফিচার থাকে যেগুলোর পাশাপাশি অ্যালার্ম, স্টপওয়াচ এবং টাইমারের সুবিধাতো আছেই। তবে এই ঘড়ির সব মডেলে স্পিকার নাও থাকতে পারে যদিও সেগুলো ভাইব্রেটের মাধ্যেমে সময় জানিয়ে দেয়।

অ্যালার্ট ও নোটিফিকেশন সুবিধা : একটি হাত ঘড়ি থেকে আপনি আপনার ফোনের প্রাথমিক সার্ভিসগুলো উপভোগ করতে পারবেন, এর থেকে চমৎকার বিষয় আর কী হতে পারে! ধরুন আপনি খুব ভিড়ের ভেতর আছেন যেখানে আপনার মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করা কঠিন। সেখানে স্মার্ট ওয়াচ আপনাকে ফোনের প্রাথমিক প্রায় সব তথ্যই সরবরাহ করবে। অর্থাৎ এই ডিভাইসটি যে ফোনের সঙ্গে সংযোগ করা থাকবে তার সমস্ত তথ্য এবং নোটিফিকেশন দেখিয়ে দেবে।

ফিটনেস ট্র্যাকিং সুবিধা : সময় দেখানো ছাড়া স্মার্ট ওয়াচের যে ফিচারের জন্য এর জনপ্রিয়তা এত বেশি, তা হল এর ফিটনেস ট্র্যাকিং সুবিধা। এই বৈশি^ক মহামারীর কালে প্রায় সবাই নিজের সুস্থতা এবং ফিটনেস সম্পর্কে অনেক বেশি সজাগ হয়েছে। আর এই চমৎকার ডিভাইসগুলোতে নানারকম ফিটনেস ট্র্যাকার এবং সেন্সর থাকে, যা স্বাস্থ্য রক্ষায় অনেক সহায়ক। যেমন-

পেডোমিটার : এই সেন্সর হাঁটার যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করে। কতগুলো স্টেপ হাঁটলেন, এবং তাতে আপনার কত ক্যালরি ব্যায় হলো, এমনকি আপনার ওজনের হিসাবে কতটা হাঁটা দরকার ইত্যাদি তথ্যও প্রদান করে থাকে। ফিটনেস ট্র্যাকিংয়ের সুবিধাকে স্মার্টওয়াচের ব্যাপক জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ব্লাড প্রেসার মনিটর : ডায়াবেটিসের মতো ব্লাড প্রেসারও আমাদের দেশে এখন অতি সাধারণ সমস্যা। এই ডিভাইসগুলোতে থাকা ব্লাড প্রেসার মনিটর আপনার রক্তচাপ পর্যবেক্ষনে রাখতে সাহায্য করে সঙ্গে পুরোনো রক্তচাপের চার্টও সংরক্ষণ করে।

ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার : অনেক স্মার্ট ওয়াচে ফিজিক্যাল এক্টিভিটি ট্র্যাকারও থাকে যা দিয়ে আপনি বিভিন্ন সময়ে করা খেলাধুলার রেকর্ড রাখতে পারবেন। এছাড়াও আপনার শরীরচর্চার ও যোগাসনের রেকর্ডও সংরক্ষিত রাখতে পারে।

হার্ট-রেট মনিটর : এখন প্রায় সকল ডিভাইসেই পাওয়া যায়। সাধারণত যারা পেশাগতভাবে খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত আছেন তাদের জন্য এই অ্যাপটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

স্লিপ মনিটর : সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। তাই অনেক স্মার্ট ওয়াচেই এখন স্লিপ মনিটর ফিচারটি থাকে। এটি আপনার প্রতিদিনের ঘুমের রেকর্ড সংরক্ষণ করাসহ অন্যান্য সুবিধা প্রদান করে থাকে।

কলিং এবং মেসেজিং এর সুবিধা : বাজারে প্রাপ্ত প্রায় সব মডেলেই এই সুবিধাটি এখন পাওয়া যায়। আপনি যখনই আপনার স্মার্টফোনের সঙ্গে স্মার্ট ওয়াচ কানেক্ট করবেন, এই ঘড়ির মাধ্যমেই আপনার ফোনে আসা কল রিসিভ করতে অথবা কাউকে কল দিতে পারবেন। এমনকি প্রয়োজনে মেসেজও করতে পারবেন। অর্থাৎ এবার থেকে আর আপনার কোন কল মিস হবে না!

নেভিগেশন সাপোর্ট : আপনি কি মাঝে মধ্যেই পথ ভুলে যান? এখন আর কোন ভয় নেই, হাতে যদি থাকে একটি স্মার্ট ওয়াচ তবে পথ খুঁজে নেয়া এখন আর কোনো শক্ত কাজ নয়। কারণ প্রায় সব মডেলের স্মার্ট ওয়াচেই ইনবিল্ট নেভিগেশন ফিচারটি এখন থাকে। তাই ফোন খুঁজে রাস্তা বের করার প্রয়োজন পড়ে না, ডিভাইসটিই ভাইব্রেশনের মাধ্যমে সঠিক দিক নির্দেশ করে। এখানেই শেষ নয়, এই ডিভাইসে আপনি পছন্দের গান শুনতে পারবেন, ফোন থেকে পছন্দের গান খুঁজে নিতে পারবেন, এমনকি ওয়াইফাই সংযোগ থাকলে ফোন ছাড়াও সরাসরি ডিভাইস থেকেই গান বাজানো যাবে। এছাড়াও আপনি যদি প্রায়শই আপনার চাবি বা ফোন হারিয়ে ফেলেন তবে এর ফাইন্ড মাই ফোন এবং কী ফাইন্ডার ফিচার দিয়ে সহজেই খুঁজে নিতে পারবেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close