তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
টিকটকে নিরাপদ রাখবে যে ১০ ফিচার
ডিজিটাল প্ল্যাটফরম ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে টিকটক। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে টিকটক। যেখানে ‘ফিডস’ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য কনটেন্ট তৈরি এবং ভুল তথ্য মোকাবেলা করা হয়।
বিশ্বের লাখ লাখ তরুণ-তরুণী টিকটক ব্যবহার করছে। তাদের নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ দিতে টিকটক ডিজাইন করেছে কিছু ইন-অ্যাপ ফিচার। ক্ষতিকারক কনটেন্ট থেকে রক্ষা পেতে এবং মানসিক সুস্থতার প্রচার করতে এই ফিচারগুলো সহায়ক হচ্ছে। কিশোর-কিশোরী, অভিভাবক এবং টিকটকের নিয়মিত ব্যবহারকারীসহ সকলকে সুস্থ ডিজিটাল পরিবেশ গড়ার জন্য উৎসাহিত করতে সক্ষম হচ্ছে এই বিশেষ ফিচারগুলো। প্ল্যাটফরমের সুরক্ষা এবং সুস্থতার জন্য টিকটকের ইন-অ্যাপ ফিচার-
মানসিক স্বাস্থ্যে সহায়তা : মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বা বিষণ্ণতা বোধ কাটিয়ে উঠতে টিকটকে রয়েছে একটি আলাদা পেইজ। যদি কেউ আত্মহত্যা বা মানসিক সমস্যা নিয়ে টিকটকে সার্চ বা অনুসন্ধান করে তৎক্ষণাৎ প্ল্যাটফর্মটি এই কীওয়ার্ডগুলো শনাক্ত করে ফেলে। যেখানে ‘ইউ আর নট অ্যালোন’- এই মেসেজটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের সহায়তা নিতে উৎসাহিত করা হয়। এতে প্ল্যাটফরম ব্যবহারকারীদের সাহায্য করতে স্থানীয় জায়গার হেল্পলাইন নাম্বারও প্রদান করা হয়।
বয়সের সীমা এবং রেস্ট্রিকশেন : তরুণদের জন্য ডিজিটাল পরিসরে নিরাপত্তা জোরদার করতে টিকটক ব্যবহারের জন্য বয়সসীমা রয়েছে। প্ল্যাটফরমটি ব্যবহার করতে হলে ব্যবহারকারীর বয়স হতে হবে ১৩ বছরের বেশি। আবার, ১৮ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য ‘কনটেন্ট রেসট্রিকশেন’র মাধ্যমে বয়স উপযোগী কনটেন্ট নিশ্চিত
করা হয়।
সীমিত স্ক্রিন টাইম : এই টুলটি অনলাইনে অতিরিক্ত সময় দেয়া থেকে ব্যবহারকারীদের বিরত রাখে। এর পাশাপাশি, ব্যবহারকারীর সাপ্তাহিক স্ক্রিন টাইম আপডেটও সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া, নোটিফিকেশন ও ইনবক্সে আপডেটের মাধ্যমে, ব্যবহারকারীরা তাদের ডিজিটাল কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত থাকতে পারেন।
স্ক্রিন টাইম ড্যাশবোর্ড : যারা তাদের ডিজিটাল লাইফ বা অনলাইন প্ল্যাটফরম ব্যবহারের অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাদের জন্য টিকটকে রয়েছে স্ক্রিন টাইম ড্যাশবোর্ড। কি পরিমাণ সময় কীভাবে অ্যাপটিতে ব্যয় হচ্ছে সেটির বিশদ বিবরণ এই ফিচারে পাওয়া যাবে যেটি মানসিক সুস্থতার উপর অনলাইনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে বিরত রাখতে সহায়ক।
স্ক্রিন টাইম ব্রেক : ডিজিটাল প্ল্যাটফরম দীর্ঘ সময় ব্যবহার ক্লান্তির কারণ হতে পারে। তাই এতে অতিরিক্ত সময় দেয়া থেকে বিরতি নিতে টিকটকের ‘স্ক্রিন টাইম ব্রেক’ ফিচারটি ব্যবহারকারীদের সহায়তা করছে। স্ক্রিন টাইমের মাত্রা বেড়ে গেলে এক ধরনের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। তাই স্ক্রিন টাইম ব্রেকের মতো রিমাইন্ডারগুলো বর্তমান সময়ের জন্য খুবই উপযোগী।
কমবয়সি ব্যবহারকারীদের জন্য স্ক্রিন টাইম : কমবয়সি ব্যবহারকারীরা, বিশেষত ১৩-১৭ বছর বয়সিরা যদি একদিনে অ্যাপটিতে ১০০ মিনিটের বেশি সময় ব্যয় করেন তবে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের জন্য মেসেজ পাবেন। এই ফিচারে টিকটকে প্রতিদিন স্ক্রিনের সময়সীমা তারা নির্ধারণ করতে পারে। টিকটকের ‘টিন সেফটি সেন্টার’ এবং ‘গার্ডিয়ানস গাইডে’ এই বিষয়ে আরো তথ্য রয়েছে।
ফ্যামিলি পেয়ারিং : ‘ফ্যামিলি পেয়ারিং’ ফিচারের মাধ্যমে, অভিভাবকরা তাদের অ্যাকাউন্ট সন্তানদের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে লিঙ্ক বা যুক্ত করতে পারে। এর মাধ্যমে সন্তানদের স্ক্রিন টাইমিং, কনটেন্টের বিষয়বস্তু এবং প্রাইভেসি সেটিংস সরাসরি অভিভাবকরা নির্ধারণ করতে পারে। ফলে সন্তানের অনলাইন অ্যাক্টিভিটি সম্পর্কে তাদের ধারণা থাকে এবং নিজেরাই ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
টিকটকের সেফটি সেন্টার ওয়েল-বিইং গাইড : মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে টিকটকের ‘সেফটি সেন্টার’ এ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ওয়েল-বিইং গাইড। এই গাইডগুলো ব্যবহারকারীদের ডিজিটাল অভ্যাস ভালোভাবে গড়ে তোলার জন্য পরামর্শ দেয়। একইসঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় অন্যদের কীভাবে সহায়তা করা যায় সে সম্পর্কে তথ্য দিয়ে থাকে।
স্লিপ রিমাইন্ডার : টিকটকের স্লিপ রিমাইন্ডার ফিচারটি ব্যবহারকারীদের ঘুমের অভ্যাস সঠিকভাবে গড়ে তুলতে ডিজাইন করা হয়েছে। এই স্লিপ রিমাইন্ডারটি সেট করার মাধ্যমে, ব্যবহারকারীরা একটি নির্দিষ্ট সময়ে নোটিফিকেশন মিউট বা বন্ধ করতে পারেন। ফলে রাতের বিশ্রামের সময়ে কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। এছাড়া, ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর টিকটক স্বয়ংক্রিয়ভাবে নোটিফিকেশন মিউট করে দেয়।
কমেন্ট ফিল্টারিং : কমেন্ট ফিল্টারিং ফিচারটির মাধ্যমে প্ল্যাটফরমের ইউজাররা তাদের অ্যাকাউন্টের কমেন্ট সেকশন নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কেবল ফলোয়ার নাকি যে কেউ কমেন্ট করতে পারবে কিনা তা ইউজাররা অ্যাকাউন্টের প্রাইভেসি সেটিংস অপশনের মাধ্যমে ঠিক করতে পারবে। এ ছাড়া যে কমেন্টগুলো স্প্যাম, আপত্তিকর, অথবা কমিউনিটি গাইডলাইনস লঙ্ঘন করে করছে সেই কমেন্টগুলোর অ্যাকাউন্ট ইউজাররা রিপোর্ট করতে এবং কমেন্ট ফিল্টার করতে পারে। যার মধ্য দিয়ে প্ল্যাটফরমে বজায় থাকে ডিজিটাল সুস্থতা।
"