তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
জীবন সহজ করতে গুগল ম্যাপের ব্যবহার
গুগল ম্যাপ এখন নাগরিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কোনো সময় যে কোনো স্থানের দূরত্ব, যাতায়াতের সবচাইতে নির্ভেজাল রুটসহ নানাবিধ ফিচার রয়েছে এতে। তবে যাপিতজীবনকে সহজ করবার পাশাপাশি ভ্রমণকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে গুগল ম্যাপস কীভাবে অনুষঙ্গ হতে পারে তা এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিস্তারিত।
সহজেই লোকেশন শেয়ারিং : গুগল ম্যাপে যেমন যেকোনো শহরের রুট সম্পর্কে জানা যায়, তেমনি কোন রাস্তা ব্যবহার করলে সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়ে কম সময়ে এবং যানজটমুক্ত রাস্তা ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় সেই নির্দেশনা দেয় অ্যাপটি। তাই এর মাধ্যমে কাছের মানুষেরা কোথায় আছে তা যেমন জানা যায়, তেমনি বিপদে পড়লে লোকেশন শেয়ার করলে সহজেই উদ্ধার হওয়া সম্ভব। তাই বলা যায়, জরুরি সেবা পেতে গুগল ম্যাপস তখন বেশ কাজের। পাশাপাশি প্রয়োজন হলে নিজের অবস্থানও অন্যদের জানিয়ে দেয়ার সুযোগ থাকছে। ‘লোকেশন শেয়ারিং’ অপশন নির্বাচন করে কত সময়ের জন্য করতে হবে তা ঠিক করলে কন্টাক্ট লিস্ট দেখাবে, পাশাপাশি লিংক কপিও করা যাবে। এরপর কন্টাক্ট বেছে নিলেই লিংক চলে যাবে। অন্য পাশ থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবস্থান দেখা যাবে।
ঘুরতে গিয়ে সহজে হোটেলের খোঁজ : ঘুরতে যেতে দেশে তো বটেই, বিদেশে হলে বেশ আগে থেকে হোটেল বুকিং করা জরুরি। ভ্রমণের স্থান ঠিক করার পর পরই প্রথম কাজ আশপাশের দর্শনীয় স্থানের দূরত্ব বিবেচনায় সামর্থ্য অনুযায়ী হোটেল বুকিং দেয়া। এতে অর্ধেক চিন্তা ও ঝামেলা দূর হয়ে যাবে। গুগল ম্যাপসে ভ্রমণের স্থান লিখে প্রথমে সার্চ করতে হবে। এরপর স্ক্রিনের ঠিক ওপরে হোটেলসহ আরো কিছু অপশন পাওয়া যাবে। ‘হোটেলস’ অপশনটি নির্বাচন করলে ওই এলাকার মূল্যসহ হোটেলের তালিকা দেখাবে। যেকোনো একটিতে ক্লিক করলে হোটেলটির অন্যান্য তথ্যসহ আগে যারা থেকে গেছেন তাদের রেটিং দেখা যাবে। বুকিংয়ের জন্য পাশাপাশি প্রতিযোগী অন্যান্য হোটেল বুকিং ওয়েবসাইটের দরদামও দেখাবে।
নির্দিষ্ট দূরত্বের পরিবহনের খোঁজ : আমরা যারা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করি তার সবাই গুগল ম্যাপ মোবাইল অ্যাপটি সম্পর্কে কম বেশি জানি। যা জীবনকে করেছে সহজ থেকে সহজতর। এতে মিলবে পরিবহন সংশ্লিষ্ট নানা সুবিধা। কাঙ্ক্ষিত স্থান সার্চ করলে ‘ট্রানজিট’ অপশন পাওয়া যাবে, যা নির্বাচন করলে স্থানটিতে যেতে যেসব স্টেশন পড়বে সেগুলো দেখাবে। প্রতিটি স্থানে ‘ডিরেকশনস’ অপশন রয়েছে।
তাতে ক্লিক করলে কার, বাস বা হেঁটে কতটা পথ পাড়ি দিতে হবে সে তথ্য দেখাবে। পাশাপাশি সম্ভাব্য বাস বা ট্রেনসহ অন্যান্য পরিবহনের তথ্যও দেখাবে। এছাড়া নির্দিষ্ট দূরত্বে সড়কে যানজটের অবস্থা কী তাও জানা যাবে। ফলে ভ্রমণের দিন প্রয়োজনে সময় হাতে নিয়ে বের হওয়া যাবে।
দর্শনীয় স্থান : ভ্রমণের স্থান সার্চ করলে স্ক্রিনের ওপরের দিকে বেশ কয়েকটি অপশন দেখাবে। সেখান থেকে রেস্তোরাঁ, পানশালা, এটিএম বুথসহ আরো কয়েকটি তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া ‘থিংকস টু ডু’ নামে একটি অপশন রয়েছে। এর মাধ্যমে আশপাশে ঘুরে দেখার জায়গা ও স্থাপনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। প্রতিটি স্থান সেভ করে রাখার সুযোগও থাকছে।
লোকাল গাইড ও রিভিউ দেখে সিদ্ধান্তের সুবিধা : গুগলের রয়েছে লাখ লাখ ‘স্থানীয় গাইড’। স্থানীয় গাইডগুলো ফোর স্কয়ারের আপনাকে মনে করিয়ে দেবে এবং এটি গুগলের বেস মানচিত্রের ওপর ভিত্তি করে আরো ব্যক্তিকে তথ্য সংগ্রহের একটি স্তর সংগ্রহের চেষ্টা করছে। আপনি যখন গুগল মানচিত্রে আছেন, তখন মাই কন্ট্রিবিশনে যান এবং আপনি আপনার এলাকার বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধান করতে পারবেন। একটি পর্যালোচনা রেখে, কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার এবং একটি ছবি জমা দেওয়ার মাধ্যমে, আপনি এই অতিরিক্ত স্তরের ডেটায় অবদান রাখতে পারেন। এই স্থানীয় জ্ঞান মানচিত্রকে একটি ক্যাফের ভাইব মতো জিনিস জানতে সাহায্য করে, একটি হোটেলে পার্কিং আছে কি না বা একটি রেস্টুরেন্ট বিকল্প আছে কি না, জানতে সাহায্য করে।
অন্যরা যখন কোনো স্থান সম্পর্কে খোঁজ করবেন, তারা যেন সঠিক তথ্য পান এজন্য ‘রিভিউ’ বা মতামত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। স্থান বা রেস্তোরাঁ গুগল ম্যাপসে সার্চ করার পর ‘রিভিউজ’ থেকে ‘রাইট আ রিভিউ’ অপশন পাওয়া যাবে। সেখানে ১-৫ রেটিং দেওয়ার পাশাপাশি নিজের মতামত লেখার সুযোগ থাকছে। এ রেটিং দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, সেখানে যাবেন কিনা।
"