তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

  ০৪ আগস্ট, ২০২২

অ্যাপল, সনিকে টপকে গেমিং বাজারে শীর্ষস্থানে টেনসেন্ট

গেমের বাজারে চীনা প্রযুক্তি সংস্থা টেনসেন্ট হোল্ডিংস শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি ১৮০টি ক্ষুদ্র ও কৌশলী বিনিয়োগ করেছে। এ প্রতিযোগিতায় সনি ও মাইক্রোসফটের মতো টেক জায়ান্টদের পেছনে ফেলে গেছে প্রতিষ্ঠানটি। ডাচ গবেষণা সংস্থা নিউজুর তথ্য বলছে, গত বছর গেমিং থেকে টেনেসেন্টের আয় হয়েছে ৩ হাজার ২২০ কোটি ডলার। জাপানভিত্তিক সনির আয় হয়েছিল ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার এবং ক্যালিফোর্নিয়ার কুপারটিনোভিত্তিক অ্যাপলের আয় হয়েছে ১ হাজার ৫৩০ কোটি ডলার।

নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টেনসেন্টের পোর্টফোলিওতে রয়েছে বেশ কয়েকটি মার্কিন, ইউরোপীয় ও দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠান। এর জের ধরেই সংস্থাটির আয় অব্যাহতভাবে ঊর্ধ্বমুখী।

এ বিষয়ে নিকো পার্টনারসের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক ড্যানিয়েল আহমেদ জানান, এ সপ্তাহে স্টিম টপ সেলার্স চার্টে প্রভাব ফেলেছে টেনসেন্টের স্টুডিওগুলো।

এ তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিল এলডেন রিং। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাপানি অ্যাকশন রোল-প্লেয়িং গেমটি মুক্তি পায়। এক মাসে বিশ্বজুড়ে তার ১ কোটি ৩৪ লাখ কপি বিক্রি হয়। গত বছর এলডেন রিংয়ের ডেভেলপার ফ্রমসফটওয়্যারের প্যারেন্ট কোম্পানি কাডোকাওয়ার আংশিক ব্যবসা কিনে নেয় টেনসেন্ট। এ ছাড়া চীনের বাইরেও অন্যান্য দেশের প্রযুক্তি সংস্থায় বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে টেনসেন্ট। বেইজিংভিত্তিক আইটিজুযির তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে ৪০ শতাংশ টেনসেন্টের বিনিয়োগ চুক্তি ছিল চীনের বাইরে। সে হিসাবে গত বছরের সামগ্রিক বিনিয়োগের তুলনায় এ বছরের প্রথম ছয় মাসেই টেনেসেন্টর শেয়ার ১৮ শতাংশ বেড়েছে। টেনসেন্টের পোর্টফোলিওর মধ্যে রয়েছে রায়ট গেমস, সুপারসেল, এপিক গেমস ও ক্রাফটন। এ বিষয়ে ওয়েক আপ ইন্টার্যাক্টিভের প্রেসিডেন্ট তাকাউকি কিকুচি জানান, এ অংশীদারত্বের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনে আমাদের অনেক কম সময় লাগবে। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি কিনে নেয় টেনসেন্ট। টেনসেন্ট এখনো নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। শিশুদের গেম খেলার সময়ে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে চীনা সরকার। ফলে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা অর্জনে প্রতিকূলতা এসে পড়ে। এছাড়া গত বছরের আগস্টে নতুন গেমের স্ক্রিনিং স্থগিত করে প্রতিষ্ঠানটি। এপ্রিলে পর্যালোচনা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত টেনসেন্টের কোনো গেম ছাড়পত্র পায়নি।

এদিকে বিশ্ববাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলো বড় ধরনের ক্রয়চুক্তি করছে। মেটাভার্স ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মেলাতে উন্মুখ প্রযুক্তি সংস্থাগুলো। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মাইক্রোসফট জানায়, প্রতিষ্ঠানটি অ্যাক্টিভিশন ব্লিজার্ড অধিগ্রহণ করবে। এদিকে চীনের বাইরের দেশগুলো আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে টেনসেন্টের জন্য। জুনে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এ বছরই অনার অব কিংস গেমটি বৈশ্বিকভাবে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। গেমিংই মূলত টেনসেন্টের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা। গত বছর মোট ৫২ শতাংশ মুনাফা অর্জন করেছিল সংস্থাটি। টেনসেন্টের আর্থিক প্রযুক্তি পরিষেবা ও ক্লাউড কার্যক্রম এখনো বিনিয়োগের প্রথম পর্যায়ে।

এর আগেও চীনের বাইরে বিনিয়োগ করেছে টেনসেন্ট। সে সময় বড় বড় বিদেশী প্ল্যাটফরমের সঙ্গে সরাসরি কোনো প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত ছিল সংস্থাটি। তবে এবার সে কৌশল বদলানোর পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর ওপর চীনা নীতিনির্ধারকদের ক্র্যাকডাউনের কারণে বর্তমানে দেশের বাইরের বাজারই হয়ে উঠেছে টেনসেন্টের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close