reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

তাসরিবা খানের

গণ-অভ্যুত্থানের কবিতা

ধূমায়িত কানন

নিখিলেষ দারিদ্র্যের সিগারেট দাও,

একটু রসিয়ে রসিয়ে পান করি,

নিকেটনের বোনেটে কিছু রক্তকণা চেটেপুটে খাব।

প্রসব বেদনায় জরাজীর্ণ অভাব,

চোখেমুখে স্বগতোক্তি ফলদায়ক,

ছেলে ফলা তুলে নিয়েছে বেঁচে বাঁচিয়ে রাখতে,

বোনের কনকনে হতাশা,

মায়ের গলার স্বর কত দিন কোণঠাসা,

বাবার ঊরুর হাড়ের জখম,

খসখসে মাথার চুলে বিলি কাটে অশনী পেখম।

টিউশনির টাকায় চালের অভাব মিটে,

জীবনের অভাব বেঁচে কোন হাটে?

কামের টনটনে অনুভূতিতে ক্লান্ত প্রেম,

ছাওয়াল চাকরি পাইলে ছানি কাটাব চোখের,

ভাইয়ে কইসে- শাড়ি দেব নতুন পাড়ের,

তাবৎ সাধ রক্তের বন্যায় ভাইস্যা গেল,

আমার ভাই-

শহীদ আবু সাঈদ হইয়া ওই খানেতে শুইয়া রইল।

***

পথের কোনো এক

শেষ বিকেল

হারানো ফেনোমেনা নীল রঙের এক খামে ফিরে এলো,

আমি কবেই ভুলে গেছি ডাকবাক্স,

ডাকবাক্সের সম্বোধন,

কচি আঙুলের অক্ষর,

বকুলের মালা লুকানো খাম,

প্রথম সিগারেটের ধোঁয়ামিশ্রিত চুম্বন।

কিছুই টানে না আর-

যখন দেখি ভদ্রলোক পতিতা,

করে লাশের বেপরোয়া ব্যবসা।

কিউবিক মিটার আবেগ মাপতে পারেনি আমার,

তোমার চিবুকের পড়ন্ত বিকেলে-

তাই রাজপথে ভাইয়ের লাশ ফেরি করা আমি,

আমি পাইনি তোমার অন্তর্বাসের গোধূলি,

হয় দেশ না-হয় রক্তের হোলি,

কপালের সিঁদুর করে রেখেছো যাকেই,

পায়ের ধুলোয় মিশে আছি আমিই,

মরতে ভয় না পাওয়া তরুণ-তরুণী,

সবাই-ই কোন গল্পের অসমাপ্ত আত্মজীবনী,

কেউ ব্যস্ত তোমার কলঙ্ক খুঁজতে,

আমি এঁকে যাই তোমায় করতে অলঙ্কৃত!

***

আমি এক ফিলোমেলা

অজানা অবহেলার শিউলি যতবার তিমির বিদীর্ণ করে,

ততবার আমি ছটফট করি বলতে গিয়ে তোমায়-

হে পিতা আমার নিরাপত্তা কোথায়?

আবার ইতিহাস লেখা হোক-

রাতের প্রলেপ নিয়ে,

আকাশের সীমাহীন চাহিদা নিয়ে,

বহমান কামের রথ টানা নিয়ে,

লিখুক-

অযাচিত অশোভন অধিকারকে ধিক্কার দিয়ে।

হোক এক সবুজবীথি-

যেখানে আমি উড়ব নাইটইঙ্গেল পাখিটি হয়ে

বোবা নারী সেজে থেকে থেকে পাখাগুলো ক্লান্ত

শরীর না হোক দুর্বলতা,

মজ্জা হোক আমাকে বিচারে চূড়ান্ত।

***

কোকিলের ডাকে কাকেরা ঘাবড়ে যায় যখন

কথায় কথায় বাংলা ছাড়,

আর বলবি না হতচ্ছাড়,

কার্নিশে ঘুমিয়ে পড়া হাড়,

আজ করছে হুঙ্কার!

কাকের বাসায় ঘর বেঁধেছে স্বৈরাচার।

আকাশের তারারা হয়ে উঠেছে দুর্বার।

সিজোফ্রেনিয়া থেকে সেরে উঠেছে দেশ আবার।

তারারা ফিরে যাচ্ছে তারাদের দেশে-

নীল ফসলের উঠান রক্তাতিসার।

নক্ষত্রবীথিতে স্লোগান হাতে দাঁড়াব শতবার।

নীল চাদরে জুঁইফুল তুলব-

তোমরাই তো রক্তের নদীর মালাকর!

চিত্তে ফুল ছুড়ে মেরে ফেললে সব হাহাকার!

***

অচেনা শহর

তুমি উজ্জীবিত ঝঙ্কার,

প্রয়াণে নির্ভয়,

গল্প লিখে চলো কত সহজ চরিত্রে,

উপন্যাস হেরে যায় বহমান রক্ত নদীর কাছে,

চঞ্চলতা আকুলি-বিকুলি দিয়ে তোমাকে খুঁজে-

তোমারে পাই হেরেও জিতে যাওয়ার

না ফেরার দেশে...

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close