রব দেওয়ান-সৈয়দের তিনটি কবিতা
রব দেওয়ান-সৈয়দ লন্ডনে বাস করেন। লেখালেখির চর্চা করেন কৈশোর থেকে। আর্ট কলেজে গ্রাফিকসে পড়াশোনা। নান্দনিক বাস্তববাদের নিয়মাবলির বাইরে গিয়ে মেটাফিকশনাল ভাবনায় ভর করে লেখেন উত্তর-আধুনিক কবিতা। মধ্যবিত্ত, মফস্বল, মধ্যপন্থা তার কবিতায় বিশেষ স্থান পায় বলে নিজেকে আবার পরাবাস্তববাদীর কাতারে দাঁড় করাতে চান না। তাই তার কবিতায় ফুটে উঠে রহস্যময় সংশয়বাদের বিমূর্ততা।
নীল ঘৃণাগ্রন্থ
শূন্যতায় পুড়ে যাওয়া প্রেমে বার্নল ক্রিম
মাখায় সুতোয় বাঁধা গ্যাস বেলুন।
সাদা-কালো শহরে আসে ভাড়াখাটা ঘাতক চলে গুলি, ঝরে রক্ত!
নীল ঘৃণাগ্রন্থের প্রথম পাতা লেখা হলো
ভালোবাসার লাল লাল অক্ষরে!
আততায়ী পথিক না প্রেমিক? চাঁদের
ঈর্ষায় গলিত পৃথিবী, জীবনের লাশঘরে।
আপসের প্রেম
সাতসকালে দাঁতখিল্লি করতে করতে
কালো কাকের অন্ধকারে বেজে উঠে খমক খঞ্জনি।
ঘুণে ধরা শিরদাঁড়া নিয়ে গিজগিজ বাসাবাড়ির নয়ছয়ে
নির্লিপ্ত ফালতু রুটিরুজির দর্শন। দুহাতি বারান্দায়
রোদ উঠলেই যাই যাই করে। হৃদয়ে কাঁটা ফোটানোর
আগেই মিলিয়ে যায় আপসের প্রেম।
দরজায় খিল দিয়ে, সাদা-পাকা দাড়িতে গজায়
তারাপুরী বেগুনচারা। চাঁদের নিয়ম ভেঙে মুখোশ পরে
কামনা কারবারি, খোঁপায় গাঁথে বাসনার ফুল।
আহারে যৌবনের সন্ধ্যা... কোথায় ভরপুর দুপুর?
সবজিজীবন
আরশিনগরের নাগরিকরা
অচেনা পুঁথিপত্রে অমরত্ব খোঁজে। বাইপাস
সড়কের ধারে ছাপোষা মধ্যবিত্ত জগৎ
শাশুড়ি-বৌমা, বাবা-ছেলে
রাতের হিসেব লিখে রাখে।
সবজিজীবনের মুনশিয়ানার ওপর
পর্দা টেনে ফ্ল্যাটবাড়ির জানালা গলে
বেরিয়ে আসে মিটমিট প্রেমের আলো।
বিনিময়ের বৃষ্টিতে ভিজে খাকি দেহ
পুলিশের বাধা দেওয়া অপার আনন্দ।
"