
‘বই প্রকাশ করা উচিত ভেবেচিন্তে’
সাহিত্যের নানা বিষয় নিয়ে প্রতিদিনের সংবাদের মুখোমুখি কবি ও শিশুসাহিত্যিক এনাম আনন্দ

আপনি কেন কবিতা লেখেন?
মানুষ তার প্রতিটি মুহূর্ত নিজেকে এবং জগৎকে নতুনভাবে উপলব্ধি করে। মানুষের মনোজগতে যে অহরহ বিপ্লব ঘটে, তাকে দমিয়ে রাখলে বা রোধ করলে জীবনের মৃত্যু ঘটে। কবিতার মাধ্যমে প্রকৃতি ও মানবজীবনের সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্না, প্রেমণ্ডপ্রীতি, ভালোবাসা, আবেগ, অনুভূতি, পাওয়া-না পাওয়া, শব্দের প্রয়োগ কিংবা ভাবার্থ, বাক্যবিন্যাস, উপলব্ধি, দূরদর্শী চিন্তাশক্তির বহিঃপ্রকাশ, উপমা-উৎপ্রেক্ষা-চিত্রকল্প যতটা সুন্দরভাবে কবিতায় প্রকাশ করা যায়, তা অন্যকিছু লিখে প্রকাশ করা যায় না। যার কারণে আমি কবিতা লেখি।
নবীনরা কিছুদিন লেখালেখি করেই বই প্রকাশের জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন, বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
দেখুন, সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে চতুর্দিকে মৌসুমি লেখক ও খই ভাজা লেখকের অভাব নেই। বাংলা লিপির উৎপত্তি, বিবর্তন, পরিণতি ও ইতিহাস বিস্ময়কর! সাহিত্যের ইতিহাস ও চরিত্র একটি ধারাকে অবলম্বন করে বিবর্তিত হয়। একটি সন্তান জন্ম দেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার, তার চেয়ে অধিক কষ্টসাধ্য হলো- সুস্থ-স্বভাবিক ও হৃষ্টপুষ্ট সন্তানকে পৃথিবীর আলোর মুখ দেখানো। একজন লেখকের কাছে তার এক একটি লেখা বা বই সন্তানের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। নবীন লেখকদের প্রচুর আবেগ থাকে, তা ছাড়া প্রথম বইটি প্রকাশ করা হলো একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন। নবীনরা দ্রুত স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বই প্রকাশে তাড়াহুড়ো করেন। বই প্রকাশ করা উচিত ভেবেচিন্তে। পরে প্রকাশিত বই নিয়ে যেন লজ্জায় পরতে না হয়। এ ক্ষেত্রে প্রকাশনীগুলোর কিছু দায়দায়িত্ব রয়েছে।
সম্প্রতি আপনার কয়েকটি লেখা সমালোচিত হয়েছে। বিষয়টি কি ইতিবাচক না নেতিবাচক?
সত্যি কথা বলতে, সমালোচনা কিন্তু সব লেখকের হয় না। যারা লেখালেখি করেন তাদের কাছে সমালোচনা হচ্ছে একটি প্রত্যাশিত বিষয়। সমালোচনা লেখালেখির সম্ভাবনার পথ উন্মুক্ত করে। আমরা নিশ্চয়ই জানি, সমালোচনা সাহিত্যের একটি অংশ। সুতরাং সমালোচনাকে আমি ইতিবাচক দেখি।
আপনি একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। এত ব্যস্ততার মধ্যেও লেখালেখির জন্য কীভাবে সময় বের করেন?
কোনো জিনিসকে ভালোবাসলে তার জন্য শত ব্যস্ততার মধ্যে সময় বের করা লাগে এবং ইচ্ছশক্তি থাকলে বের করা যায়।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
আপনাকে ও প্রতিদিনের সংবাদকে অসংখ্য ধন্যবাদ। পত্রিকাটির উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : কাঞ্চন বিধু
"