যে কবিতা সময়ের ছবি আঁকে
কবি মনসুর হেলাল কুমিল্লা নগরীর ছোটরায় জন্মগ্রহণ করেন। অষ্টম শ্রেণি থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। গবেষণামূলক গ্রন্থ, ছড়া, প্রবন্ধ লিখলেও কবি হিসেবেই তিনি অধিক পরিচিত। সাংবাদিকতার পাশাপাশি কবিতা লেখেন মনের তাগিদেই।
সমকালীন কবিদের মাঝে এক সুপরিচিত নাম মনসুর হেলাল। তার কবিতার ভাঁজে ভাঁজে প্রেম, দ্রোহ, সমকালীন সময়, অজানা গন্তব্যের ছবি পরিস্ফুটিত।
পাঠক কখনো সিক্ত হবে প্রেমের ফল্গুধারায়। কখনো পুড়বে দ্রোহের আগুনে। কখনো খুঁজবে চিরন্তন গন্তব্য হৃদয়ের আলোকে। আবার কখনো হাহাকার হয়ে বাজবে অসীম শূন্যতা হৃদয়ের অতলে।
‘গন্তব্যে বিপন্ন বিদ্রুপ’ কবিতার বইটিতে কবিতার সংখ্যা ৫৪টি। প্রথম কবিতার নাম ‘বৈরিতার নুন’। কবি এখানে প্রশ্ন রাখতে গিয়ে বলেছেন, ‘আর অমীমাংসিত সত্যের দীর্ণ প্রাচীর পেরিয়ে/হাতে নিয়ে রক্ত জবা কেন তুমি এলে?/কেন এলে?’
‘নিষিক্ত প্রণালী’ কবিতায় হাহাকার হয়ে বাজে- ‘প্রশ্ন নেই প্রশ্ন নেই, পূবেতে সাগর নিধি/পশ্চিমে পাহাড়।’
হাহাকার হয়ে বাজে বিব্রত আঁধার কবিতার শেষের চরণ- ‘গমনাগমন নির্ধারিত;/তোমাকে যেতেই হবে।’
‘সংহার’ কবিতায় কবির হৃদয়ের চাওয়ার, না পাওয়ার হাহাকারের প্রতিফলন দেখা যায়। ছন্দময় কবিতা সংহারে কবি লিখেছেন- ‘অনেক দিনের ইচ্ছে আমার আকাশটাকে ছুঁই।/আকাশটা কি অনেক দূরে/কঠিন পারাপার/বেভুল রাতে ল-ভ- স্বকৃত সংসার।’
‘আর্ত শব্দাবলী’ কবিতায় ৫২ থেকে ৭১ চিত্রায়িত হয়েছে সুনিপুণ শব্দের বুননে।
শেষ কবিতার নাম ‘অবগাহন’। শেষের দু’লাইনে কবি নিজেকে প্রকাশ করেছেন ধীর স্থীর ধ্যানমগ্ন একজন মানুষ হিসেবে। ‘যা কিছু দেখি সবই শেষবারের মতো দেখি/এমন কি তোমাকেও।’
মানসম্মত কাগজ, ঝকঝকে প্রিন্ট, সুন্দর প্রচ্ছদ আর টেকসই বাঁধাইয়ের চমৎকার চমৎকার কবিতা নিয়ে প্রকাশিত ‘গন্তব্যে বিপন্ন বিদ্রুপ’। পাঠকের সংগ্রহে রাখার মতো একটি চমৎকার কাব্যগ্রন্থ এটি। আশা করি, পাঠকের চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে কবিতাগুলো। গন্তব্যে বিপন্ন বিদ্রুপ প্রকাশ করেছে ‘জাগতিক’। প্রচ্ছদ করেছেন বদরুল হায়দার। দাম ২০০ টাকা।
* শাকিলা নাছরিন পাপিয়া
"