সোহেল মাজহার

  ১৫ অক্টোবর, ২০২১

ধারাবাহিক রচনা । ৬

উপন্যাসে বঙ্গবন্ধু

২৫ মার্চ রাতেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের ৬৭৭ নম্বর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। অপারেশনের দায়িত্ব ছিল মেজর বিল্লালের ওপর। বঙ্গবন্ধু মুজিবকে গ্রেপ্তারের পর পশ্চিম পাকিস্তান পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ছিলেন বাঙালির আস্থা, বিশ্বাস, নির্ভরতার প্রতীক। ২৫ মার্চের গণহত্যার পরেও ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ লাইনসরে পুলিশ বাহিনীর অসম লড়াই, দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে মুক্তিকামী জনগণ যে প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তার পেছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন নির্ভরতার কেন্দ্রবিন্দু। শুধু তাই নয়, সাধারণ জনগণের কাছে তখন তিনি রূপকথার নায়ক ও অতিমানব। মানুষ বিশ্বাস করতে স্বস্তি পায় যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পাকিস্তানি বাহিনীর স্পর্শের সীমানার বাইরে। অবিশ্বাস্য ক্ষমতার বলে যিনি থাকতে পারেন সব ধরাছোঁয়ার বাইরে, করতে পারেন অসাধ্যসাধন। বস্তুত ব্যাপক মানুষ বঙ্গবন্ধু মুজিবের আহ্বানে সারা দিয়ে, তার প্রতি আস্থা রেখেই মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। সেদিন তার কোনো বিকল্প ছিল না। কারো কারো পক্ষে আর এত সর্বব্যপ্ত ব্যক্তিত্বের আবহ নিয়ে বাঙালি জাতিকে প্রভাবিত করা সম্ভব নয়। আর কোনো দিন সম্ভব হবে না। লেখক রাবেয়া খাতুন অত্যন্ত শিল্পিত ভাষা আবেগের যে মিথ সৃষ্টি করেছেন, উপন্যাস তা ব্যক্ত করেন এভাবে- ‘রিপন আবার ছুটে এসে খবর দিয়ে গেল, আপা ওরা বলছে শেখ মুজিব বন্দি। রাশা বারান্দা ছেড়ে উঠানে এসে দাঁড়াল। পুকুর পাড়ের গাছের তলায় কটি লোক বসে বিড়ির সঙ্গে কথা চলছে অরা আমগোরে বলদ ঠাওরাইছেনি মিয়াবাই। যে রাইতে তামাম শহরে আগুন পুরতাছিল তখন বুঝি নেতা সাইব অগো জন্যি বাড়িত বইসা ছিল।

রেডিওতে কইলো আর বিশ্বাস করলাম আমরা, হে নিশ্চিত নদী পার অইয়া ঐ যে কি কয় গরিলা লড়াইর যুগার করতাছে। হুনছোনি হটাত মসীভাই কি কইলো, মুজিব ভাই এরে নাকি শ্যাষ দেখা গেছে এটাই ইসপিড বোটে। সাথে কালা বরকা পরা দুইজন মায়ালোক। তার স্ত্রী আর বড় মায়া।’ (পৃ. ১১২, পূর্বোক্ত) লেখকের এই বর্ণনায় প্রমাণ হয়, নিম্নবিত্তের সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কতটা নির্ভর করেছে। সাধারণ মানুষের স্থির বিশ্বাস ছিল পাকিস্তান সরকারের এমন শক্তি নেই যে, তারা বঙ্গবন্ধুর কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারে। বঙ্গবন্ধুই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় সক্ষম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close