আদালত প্রতিবেদক

  ৩০ অক্টোবর, ২০২৪

পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল চাওয়া রিটে পক্ষভুক্ত বিএনপি

বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল চেয়ে করা রিট পিটিশনে পক্ষভুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির পক্ষে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন করলে গতকাল মঙ্গলবার তা মঞ্জুর করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালে সংবিধানের ওই সংশোধনী আনা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের বৈধতা নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ ব্যক্তি গত আগস্টে হাইকোর্টে রিট করেন। এই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট পঞ্চদশ সংশোধনী কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন। এই রুল শুনানির জন্য ৩০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়। অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়। আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন ও ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশংসিত হয়েছিল। ছোটখাটো কিছু অভিযোগ ছাড়া সব রাজনৈতিক দলই ওই নির্বাচনগুলো মেনে নেয়। ওই সময় জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে অধিবেশন কার্যক্রম প্রাণবন্ত ছিল।

২০০৭ সালের এক-এগারো পরবর্তী প্রতিটি নির্বাচন বিতর্কিত প্রশ্নবিদ্ধ ও অগ্রহণযোগ্য ছিল। যদিও ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি আওয়ামী লীগ, জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল। এক-এগারোর কুশীলবরা ওই নির্বাচন পরিচালনা করেছিল। ওই নির্বাচন-পরবর্তী সংসদে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের এমপিরা অধিবেশনে সরব ছিলেন। ২০০৮-এর নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলে উদ্যোগ নেন। এ নিয়ে গঠিত একটি সংসদীয় কমিটি বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেছিল। মতবিনিময়ে প্রায় সবাই কিছু সংস্কারসহ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার পক্ষে মত দিয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পর অনুষ্ঠিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪-এর নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হয়। এই তিনটি নির্বাচন বিতর্কিত, অগ্রহণযোগ্য ও ভোটারবিহীন হয়েছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close