প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
না.গঞ্জ ও বরিশালে শেখ হাসিনাসহ ৬১১ জনের নামে মামলা
নারায়ণগঞ্জে ১০৭ জনের নামে এবং বরিশালে ৫০৪ জনের নামে মামলা হয়েছে। উভয় মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
নারায়ণগঞ্জ : জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রফিকুল ইসলাম (২৪) নামে এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, শামীম ওসমানসহ ১০৭ জনের নামে হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আল মামুন। এর আগে মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ কোর্টে রফিকুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় তার মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন। মামলায় ১০০-১২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য দিদার হোসেন রিজভী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক ও ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, নাসিক ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম, ৩নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল আশরাফসহ নারায়ণগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্থানের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বরিশাল : শেখ হাসিনা, জাহাঙ্গীর কবির নানক, জাহিদ ফারুক শামীম, বরিশালের সাবেক সিটি মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদেক আবদুল্লাহ, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীরসহ নামধারী ৫০৪ জনের নামে থানায় নতুন করে এজাহার দিয়েছেন বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া। আর নতুন এ এজাহারে ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, বরিশাল নগরের রূপাতলী সিকদার টাওয়ারের বাসিন্দা মো. জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়ার দেওয়া এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজুর করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। অনেক বড় এজাহার হওয়ায় এতে সময় লাগছে।
সোমবারে থানায় দাখিল করা ১২ পৃষ্ঠার ওই এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই দুপুরে বিএনপির ঘোষিত শান্তি সমাবেশ (শোক র্যালি) কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বাদীসহ ছাত্র-জনতা বিকেলে নগরের সিঅ্যান্ডবি রোড বিএডিসি অফিসের সামনে অবস্থান করছিল। সেসময় মামলার প্রধান আসামি শেখ হাসনিার হুকুমে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ২ থেকে ২৫ নম্বর আসামিরা সশস্ত্র অবস্থায় ককটেল বোমাসহ হিংস্র হায়েনার মতো বাদীসহ অন্যদের ওপর হামলা চালায়। শুরুতে আসামিরা ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে ককটেল ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। যাতে মামলার বাদী তার সঙ্গে উপস্থিতিদের মোটরসাইকেল ও রাস্তায় চলাচলরত গাড়ি পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিকেল সাড়ে ৩টায় আসামিরা পিস্তল, শর্টগান ও রিভলবার দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি গুলি করে ছাত্র-জনতা ও মামলার সাক্ষীদের রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়া মামলার আসামিরা বাদীসহ অন্য সাক্ষীদের হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে-পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। সেইসঙ্গে মামলার একমাত্র নারী সাক্ষী আফরোজা খানম নাসরিনকে পেটানোসহ শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে বাদীর লাইসেন্স করা পিস্তল, আইফোন ছিনতাই এবং অন্য সাক্ষীদের স্বর্ণের চেইন, মোবাইল, টাকা ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার একই ঘটনায় বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানায় এজাহার জমা দিয়েছিলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া। সেই এজাহারে নামধারী ৫৫৭ জনের বাইরে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১ হাজার জনকে আসামি করার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
"