মো. শাহ আলম, খুলনা

  ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

কাঁচাও খাওয়া যায় অগ্নিস্বর কচু

কচু খেলে গলা চুলকায়, এজন্য অনেকে এ সবজি এড়িয়ে চলেন। আবার কচুর নাম শুনলেই অনেকের হাত ও গাল চুলকাতে শুর” করে- এরকম কথাও শোনা যায়। কিন্তু কচু কাঁচা খাওয়া যায়। এ কথা কেউ মানতে নারাজ! এমনই এক জাতের কচু চাষ কর সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন খুলনার কৃষক নিউটন মণ্ডল। নিজের ঘেরের পাড়ে উঁচু স্থানে থাই অগ্নিস্বর নামে এ কচু চাষ করছেন তিনি। তার এলাকার সবার মাঝে কচুটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তার দেখাদেখি অনেকেই শুর” করেছেন এ কচু চাষ। রান্নায় এ কচুর স্বাদ অতুলনীয়।

খ্যাতি পাওয়া চাষি নিউটন শুধু কচু চাষ করেই থেমে থাকেননি। কচুর চারা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। নিউটন জানান, দুই বছর আগে কৃষি বিভাগের সহায়তায় ডুমুরিয়া উপজেলার ঘোনা মাদারডাঙ্গা এলাকায় ঘের ও সবজির খেতের পাড়ে থাই অগ্নিস্বর কচু চাষ শুর” করেন। এটি উচ্চমূল্যের কচু। এ কচু উঁচু ও শুষ্ক স্থানে লাগাতে হয়। গাছের নিচে বা ছায়া জায়গায়ও লাগানো যায়। লাইন থেকে লাইন ২ হাত কচুটি লাগাতে হবে। কচু লাগানোর সময় জৈব সার দিতে হয়। থাই অগ্নিস্বর কচু এক বছরের নিচে হার্বেস্ট করা যায় না। দেড় বছর পর্যন্ত রাখলে ২০ কেজি পর্যন্ত কচুর মূল পাওয়া যায়। কচুটি ১২ মাসই লাগানো যায়। পানি নেই এমন জায়গায় লাগাতে হয়। ঘেরে পাড় ও পরিত্যক্ত জায়গা ও ঘরের আঙিনায় এ কচু লাগানো যায়।

কচুটি কাঁচা চিবিয়ে খাওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয় চাষি দশোরথ মণ্ডল বলেন, আমাদের দেশের কচু ধরলে বা কাটলে হাত চুলকায়। সেখানে থাই অগ্নিস্বর কচু কাঁচাই খাওয়া যায়। কোনো দিন কাঁচা কচু খাইনি। তবে এ কচু খাইতে খুব স্বাদ লাগলো। কৃষক নিউটন মণ্ডল বলেন, এ কচুর গোড়া, বাকল ও পাতা খেলে গাল চুলকায় না। কাঁচা খেতে মিষ্টি আলু, শাক আলু, আনারস, কলার থোড়, নারকেল ও খেজুরের মাথির মতো লাগে। এর ভেতরের রঙ একেবারে ক্রিমের মতো হালকা হলুদ। তবে এটি কাঁচা খাওয়ার জন্য নয়। গর”, খাসি, মুরগি বা হাঁসের মাংসের তরকারিতে এ কচুর স্বাদ অতুলনীয়। শুধু মাংস নয়, মাছ কিংবা শুধু কচুটি রান্না করলেও খেতে সুস্বাদু হয়। তিনি বলেন, আমি শুর”তে ৬০০টি চারা লাগাই। এর মধ্যে ২০টি কচু বিক্রি করেছিলাম। বাকিগুলো কেটে চারা তৈরি করেছি।

নিউটন বলেন, এ কচুর চারার কদর অনেক। দেশে এ চারার চাহিদা মেটানোর মতো কোনো লোক নেই। অনেকেই আমার কাছ থেকে কচুর চারা নিচ্ছেন। প্রতি পিস চারা ৫০ টাকা করে বিক্রি করছি। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার চারা বিক্রি করেছি। চারা যদি টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে করতে পারতাম, তাহলে খরচ কম পড়তো। এ কচুর চারা তৈরি করা খুব কঠিন। চারা তৈরি করলে কচু বিক্রি করা যায় না। আমি এ কচুর গোড়া ২০ কেজি পর্যন্ত বড় করেছি। আমার কাছে ৫০০ গাছ এবং ৩ হাজার চারা আছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close