যশোর প্রতিনিধি

  ১০ অক্টোবর, ২০২৪

ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলা

যশোরে নিরপরাধকে ফাঁসানোর অভিযোগ

ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় করা মামলায় পাভেল পারভেজ (৪০) নামে যশোরের এক হোমিও চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের দাবি, গ্রেপ্তার এক নিরপরাধ ব্যক্তিকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্রভাবে মামলায় তার নাম জড়ানো হয়েছে। পাভেল পারভেজ নিরপরাধ, তার কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। পাভেল যশোর শহরের মুজিব সড়ক বাইলেনের রাবেয়া ভিলার মৃত আবদুল লতিফের ছেলে এবং শাহ হোমিও হলের স্বত্বাধিকারী। গত ১ আগস্ট ঢাকার সায়েন্সল্যাব মোড়ে হামলার ঘটনায় ১৯ সেপ্টেম্বর ডিএমপি নিউমার্কেট থানায় করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, পাভেল ঘটনার সময় যশোরেই ছিল। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে।

যশোর কোতোয়ালি থানা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১ আগস্ট হামলার ঘটনায় ১৯ সেপ্টেম্বর ডিএমপি নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা করেন ঢাকা কলেজের ছাত্র জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার ভাটকুড়ি গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে পারভেজ আলী।

মামলার এজাহারে আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষনেতা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের পদধারীসহ ৩৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। মামলার ১২ নম্বর আসামি হিসেবে পাভেল পারভেজের নাম উল্লেখ করে বর্তমান ঠিকানা ঢাকার ধানমন্ডি দেখানো হয়েছে। এ মামলায় ৭ অক্টোবর রাতে পাভেলকে যশোরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে ৮ অক্টোবর যশোরের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

হোমিও চিকিৎসক পাভেল পারভেজের স্ত্রী মেহেরুন আক্তার জানান, ঢাকায় আমাদের কোনো ঠিকানা নেই। পাভেল ছাত্র আন্দোলনের সময় যশোরেই ছিল। তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বা সংশ্লিষ্টতা নেই। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি মধুর ব্যবসা করতেন। ঢাকায় এ মামলা আসামি শুনে আমরা হতবাক হয়ে গেছি। পাভেলের নাম দিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করে।

মেহেরুন আক্তার জানান, কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই তার স্বামীকে এ মামলায় আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার চান। পাভেলের প্রতিবেশী জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব আলম শাহীন বলেন, নিরীহ প্রকৃতির ছেলে পাভেল। তিনি হোমিও চিকিৎসা ও মধুর ব্যবসা করেন। রাজনীতির সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি যশোরেই ছিলেন। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ কিংবা তার ফোন লোকেশন বা কললিস্ট পরীক্ষা করলে তা জানা যাবে। শহরের শংকরপুর এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার জানান, তিনিসহ পরিবারের সদস্যদের শারীরিক সমস্যা করে পাভেল পারভেজের কাছ থেকে হোমিও ওষুধ নেন। ডায়াবেটিস রোগের জন্যও তার ওষুধ খুবই কার্যকরী। নিরীহ হোমিও ডাক্তারকে এ মামলায় ফাঁসানোয় তিনি হতবাক হয়েছেন।

যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু জানান, ‘পাভেল আসলেই নিরীহ প্রকৃতির ছেলে। কনস্প্রেসি করে তাকে এ মামলা জাড়ানো হয়েছে। শুনেছি জমিজমা বা পারিবারিক কারণে এ মামলায় তাকে জড়ানো হতে পারে।’ মামলার বাদী ঢাকা কলেজের ছাত্র পারভেজ আলী জানান, তার করা মামলার এক আসামি যশোর গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জেনেছেন। তবে ‘পরিবারের দাবি, পাভেল ষড়যন্ত্রমূলক মামলার শিকার হয়েছেন’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি ‘আদালতে কথা হবে’ উল্লেখ করে আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি। যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক জানান, ঢাকার ডিএমপি নিউমার্কেট থানায় করা মামলায় পাভেলকে গ্রেপ্তারে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close