শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
শ্রীপুরে অ্যাসিড নিক্ষেপের ভয় দেখিয়ে আ.লীগ নেতার বাড়ি দখল
গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদরাসা শিক্ষকের স্ত্রীকে একা পেয়ে অ্যাসিড নিক্ষেপের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। ওই নেতার নাম আফির উদ্দিন, তিনি শ্রীপুর পৌর ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে শ্রীপুর পৌর এলাকার বেড়াইদের চালা গ্রামের ২নং সিঅ্যান্ডবি বাজারের পশ্চিমে দেলোয়ারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী মাদরাসা শিক্ষক দেলোয়ারের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকার দাবি, ওই বাড়ি কিনে নিজেরা বসবাসসহ মিফতাহুল জান্নাত নামে একটি মাদরাসা পরিচালনা করে আসছিলেন দেলোয়ার ও আয়েশা দম্পতি। পরবর্তীতে স্থানীয় আফির উদ্দিনের অত্যাচারে মাদরাসাটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন।
এরপর মঙ্গলবার সকালে শ্রীপুর পৌর ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফির উদ্দিন প্রশাসন বলা আইনি নোটিস ছাড়াই নিজের নেতৃত্বে মারধর করে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেন তিনি। এ ঘটনায় মামুন খান নামের সাবেক ছাত্রলীগ নেতাও নেতৃত্ব দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আয়েশা সিদ্দিকা।
তিনি আরো বলেন, যদি আফির উদ্দিন এই বাড়িটির মালিক প্রকৃতপক্ষে হয়ে থাকেন, তাহলে প্রশাসনের মাধ্যমে আমাকে বাড়ি ছাড়ার জন্য বলত, আমরা চলে যেতাম। কিন্তু জোরপূর্বক আমাকে এভাবে বের করে দিল, আমি আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও নিতে পারিনি। ৩০-৩৫ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে এভাবে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় আমি ও আমার বাচ্চা অনেক ভয় পেয়েছি। আমরা এ ঘটনার বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত আফির উদ্দিন তালা লাগানোর সময় প্রশাসনের কেউ ছিল না বলে স্বীকার করে বলেন, আমি ক্রয়সূত্রে বাড়িটির মালিক। তাই আমি তাদের বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছি। প্রশাসন ব্যতীত বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
ভুক্তভোগী মাদরাসা শিক্ষক দেলোয়ার হোসাইন বলেন, আমি রাজধানীতে থাকার সুযোগে আফির উদ্দিনের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনকে সঙ্গে নিয়ে আমার স্ত্রী সন্তানকে বাড়ি থেকে মারধর করে বের করে দেয় তারা। আমি সুস্পষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেন থানা পুলিশের সহযোগিতা চাইলে শ্রীপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক এসআই অহিদুজ্জামান ভূঁইয়া ৪-৫ জনের একটি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আফির উদ্দিন ওই নারীকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার বিষয়ে সত্যতা পেয়েছি। ম্যাজিস্ট্রেট ব্যতীত এভাবে কাউকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার এখতিয়ার কারো নেই। এটা তারা নিঃসন্দেহে অন্যায় করেছে। উভয়পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। পরে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
"