ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
উৎপাদনে ফিরল বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিট
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিট ৬ দিন বন্ধ থাকার পর উৎপাদনে ফিরেছে। নতুন ওয়েলপাম্প স্থাপন করে গতকাল রবিবার দুপুর ১টা ৫৯ মিনিট থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের এ ইউনিট ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন হলেও দৈনিক ২০০ থেকে ২২০ মেগোওয়াট বিদুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যা জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। এটি চালু রাখতে দৈনিক ২২০০ থেকে ২৩০০ টন কয়লা প্রয়োজন হবে।
এর অগে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে তৃতীয় ইউনিটটি চালু হলেও ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ওয়েলপাম্প নষ্ট হওয়ার কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ১ নম্বর ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। এ ইউনিট ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন হলেও, সেটি থেকে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। যা জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হচ্ছে। এটি চালু রাখতে দৈনিক ৮০০ থেকে ৯০০ টন কয়লা প্রয়োজন হয়। এতে করে বর্তমানে গড়ে দুটি ইউনিট থেকে ২৮৫ মেগওয়াট বিদুৎ কেন্দ্রটি থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন চালু রাখা সম্ভব হলে উত্তরাঞ্চলের লোডশেডিং অনেক আংশে কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রর কার্যক্রম পরিচালনা করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল। ২০২০ সাল থেকে ২৫ সাল পর্যন্ত ৫ বছরের চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছর তাদের মেয়াদ শেষ হবে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সরবরাহকৃত কয়লার ওপর তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্ভর করে।
তবে, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপানের ক্ষমতাসম্পন্ন তিন ইউনিটের হলেও বেশিরভাগ সময়ই দুটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। বাকি একটি ইউনিট ওভারহোলিংয়ের জন্য বন্ধ থাকে। এরমধ্যে চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ দিকে বন্ধ হয়ে যায় ২৭৫ মেগওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিটের উৎপাদন।
১ মাস ৬ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ নম্বর ইউনিটটি চালু হয়। সেটি ৬দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল রবিবার দুপুর ১টা ৫৯ মিনিট থেকে উৎপাদন শুরু করে।
অপরদিকে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে কেন্দ্রের ১২৫ মেগোওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিট বন্ধ রয়েছে। যা থেকে উৎপাদন হতো ৬৫ থেকে ৭০ মেগাওয়াট।
সূত্র মতে, বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কোল ইয়ার্ডে কয়লা মজুদ রয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকটন। আপরদিকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে দৈনিক কয়লা সরবরাহ করা হয় প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টন। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ৩টি ইউনিট চালু রেখে স্বাভাবিক উৎপাদনের জন্য দৈনিক প্রায় ৪ হাজার ৮০০ টন কয়লার প্রয়োজন। তবে তিনটি ইউনিট একই সঙ্গে কখনো চালানো হয়নি।
বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ১২৫ মেগোওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিটটি বন্ধ রয়েছে। চায়না থেকে নতুন ওয়েলপাম্প এনে স্থাপন করে রবিবার দুপুর ১টা ৫৯ মিনিটে ২৭৫ মেগওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ৩ নম্বর ইউনিট থেকে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। যা থেকে ২০০ থেকে ২২০ মেগোওয়াট বিদুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হচ্ছে। বর্তমানে গড়ে দুটি ইউনিট থেকে ২৮৫ মেগওয়াট বিদুৎ এ কেন্দ্রটি থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। এতে করে উত্তরঞ্চলের লোডশেডিং অনেকাংশে কমে আসবে।
"