মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি
বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি কেনায় ড. খাদেমুলের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খাদেমুল ইসলামের বিরুদ্ধে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শক্তিশালীকরণ প্রজেক্টের আওতায় রসায়ন বিভাগের জন্য ২০২০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ৯৭ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র শেষে ৩২টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের কাজ পান টেকনোওর্থ অ্যাসোশিয়েটস লিমিটেড। কিন্তু ৯ লাখ টাকা মূল্যমানের ভ্যাকুয়াম পাম্প (দুইটি) রসায়ন বিভাগে না বুঝিয়ে দিয়েই টাকা উত্তোলন করে নেয় কোম্পানিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস অফিস বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি যাচাই-বাছাই করত প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার পর টাকা উত্তোলন করে নেয় কোম্পানিটি।
জানা যায়, এ পুরো প্রক্রিয়ায় ড. খাদেমুল ইসলাম যুক্ত থেকে আর্থিক অনিয়মসহ যন্ত্রপাতি ক্রয়ে নয়-ছয় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সূত্রটি জানায়, পরবর্তিতে টেকনোওর্থ অ্যাসোশিয়েটস লিমিটেড থেকে ৯ লক্ষ টাকা ফেরত নেয় খাদেমুল ইসলাম। কিস্তু সেই টাকা আর তিনি বিভাগে জমা দেননি। এমনকি সেই টাকা দিয়ে সমমূল্যের যন্ত্রপাতিও ক্রয় করেননি। যদিও সব নথিপত্রে যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে বলে সংযোজন দেখানো হয়।
সূত্র জানায়, ২ বছর পরে ২০২৩ সালে টেন্ডার ছাড়াই অন্য একটি কোম্পানি থেকে ভ্যাকুয়াম পাম্প কিনেন ড. খাদেমুল ইসলাম। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয় ও যাচাই-বাছাই কমিটিকে না জানিয়ে নিজেই ঢাকা থেকে চাইনিজ ভ্যাকুয়াম পাম্প ক্রয় করেন এবং তা পূর্বে টেন্ডার পাওয়া কোম্পানির নামেই সংযোজন দেখান। আমেরিকান পণ্য কেনার কথা উল্লেখ থাকলেও তিনি কিনেছেন চায়নিজ পণ্য। এছাড়া দামেও রয়েছে বিস্তর ফারাক। পাম্পের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে। পাম্প দুইটি থেকে মাঝে মাঝেই ধোঁয়া বের হয়। পাম্প দুইটি আসল কিনা যাছাই করার দাবি তুলেছেন তৎকালীন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি যাচাই-বাছাই প্রত্যয়নপত্র সাব কমিটির আহ্বায়ক ড. আশীষ কুমার সরকার।
বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি যাচাই-বাছাই করত প্রত্যয়নপত্র সাবকমিটির আহ্বায়ক ও তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. আশীষ কুমার সরকারের কাছে পণ্য বুঝে না পেয়ে কীভাবে প্রত্যয়নপত্র ওই কোম্পানিকে দিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু অর্থবছর শেষ হয়ে যাচ্ছিল অন্যদিকে পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস অফিস থেকেও আমাকে মৌখিকভাবে প্রত্যয়নপত্র দিতে বলেছিল। না হলে এই অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফেরত যাবে। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে টেকনোওর্থ তাদের বাকি পণ্যগুলো আমাদের বুঝিয়ে দেয় ও বাকি থাকা ২টি ভ্যাকুয়াম পাম্পও বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। সেহেতু বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি যাচাই-বাছাই করত বুঝে নেওয়ার প্রত্যয়ন কমিটি প্রত্যয়ন দেয়। তবে ড. খাদেমুল ইসলামের বিরুদ্ধে এই বিষয়ে সহযোগিতা না করার অভিযোগ করেছেন তৎকালীন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি যাচাই-বাছাই করত প্রত্যয়নপত্র সাব কমিটির আহ্বায়ক ড. আশীষ কুমার সরকার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ভ্যাকুয়াম পাম্প দুইটি অরিজিনাল না, যে অবস্থায় কেনা হয়েছে, সে অবস্থাতেই ল্যাবে পড়ে আছে। এ ব্যাপারে রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খাদেমুল ইসলাম বলেন, আমি টাকা নিইনি। টোকনোওর্থ বাইরে থেকে কিনে দিয়েছে।
"