চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম নগরীতে ১০ পশুর হাট
চট্টগ্রাম মহানগরীতে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে গতকাল শনিবার থেকে ১০ স্থানে বসেছে কোরবানির পশুর হাট। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের আশপাশের জেলা ও উত্তরবঙ্গ থেকে গরুসহ নানা কোরবানির পশু নিয়ে আসতে শুরু করেছেন বিক্রেতারা।
গতকাল নূর নগর হাউজিং স্টেট, বিবিরহাট, বাজারসহ নগরের একাধিক পশুর হাট ঘুরে করে দেখা যায় শেষ মুহূর্তে হাটের নানা অস্থায়ী অবকাঠামো তৈরির কাজ চলছে জোরেশোরে। নিরাপত্তার জন্য বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। হাটের ভেতর বৃষ্টিতে কাদা এড়াতে চলাচলের পথে দেওয়া হচ্ছে বালু। ইটও বিছানো হচ্ছে কোথাও কোথাও। বেশ কয়েকজন শ্রমিককে পশুর বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন তৈরি করতেও দেখা গেছে।
এদিন নগরীর নূর নগর হাউজিং এস্টেট বাজারে কুষ্টিয়া থেকে বেশ কয়েকটি গরু নিয়ে আসেন ব্যবসায়ী আবদুস সামাদ। তিনি বলেন, প্রথম দফায় আমি ১৪টি ষাঁড় এনেছি। খামারে আরো বেশ কিছু গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে সবগুলো নিয়ে আসা হবে। কিছু গরু ঢাকায়ও পাঠানো হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, এবার সব মিলিয়ে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬৫টি কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে চট্টগ্রামে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৯ হাজার ৬৩৮টি পশুর চাহিদা রয়েছে সন্দ্বীপ উপজেলায়। সবচেয়ে কম ১৩ হাজার ৬৯৮টি পশুর চাহিদা রয়েছে নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকায়। এবার চট্টগ্রামে কোরবানির ঈদকে ঘিরে প্রস্তুত করা হয়েছে সব মিলিয়ে ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫১টি পশু। সেই হিসাবে ৩৩ হাজার ৪০৬টি পশুর ঘাটতি রয়েছে এবার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫১ হাজার ৩৬৬টি পশুর ঘাটতি রয়েছে ডবলমুরিং এলাকায়। আর চাহিদার চেয়ে সবচেয়ে বেশি ১৯ হাজার ১৯১টি পশু উদ্বৃত্ত আছে ফটিকছড়ি উপজেলায়। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৩৩ হাজার পশুর ঘাটতি থাকলেও বন্দরনগরীর হাটে আশপাশের জেলা ও উত্তরবঙ্গ থেকে খামারিরা চট্টগ্রামে পশু বিক্রির জন্য নিয়ে আসায় সেই ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬৫টি পশুর মধ্যে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ২৭৬টি ষাঁড়, ১ লাখ ৪০ হাজার ৩৫৫টি বলদ, ৩৭ হাজার ৮৪৪টি গাভি, ৭১ হাজার ৩৬৫টি মহিষ, ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩টি ছাগল, ৫৮ হাজার ৬৯২টি ভেড়া এবং ৪৪টি অন্যান্য পশু রয়েছে।
এদিকে, নগরে স্থায়ী-অস্থায়ী হাটের বাইরে অবৈধ হাট প্রতিরোধে মাঠে থাকবেন চসিকের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এই বিষয়ে চসিকের সহকারী ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বৈধ হাটের বাইরে এবার কোনো অবৈধ হাট নগরে বসতে পারবে না। অবৈধহাট প্রতিরোধে আমাদের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। ইজারা দেওয়ার সময় শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য আমাদের কিছু শর্ত ছিল, সবগুলো হাটেই সেসব শর্ত নিশ্চিত করা হয়েছে। সব হাটের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন থেকে পুরোদমে পশু বেচাকেনা চলবে।
এর বাইরে জেলার ১৫টি উপজেলায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে বসবে আরো দুই শতাধিক হাট।
"