আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
তালতলী ও আমতলী
মিধিলির প্রভাবে ৫ কোটি টাকার কাঁচা ইট নষ্ট

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ভারী বর্ষণে বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার ২৩টি ইট ভাটার অন্তত ১ কোটি কাঁচা ইট পানিতে গলে ৫ কোটি টাকার ক্ষতির হয়েছে বলে দাবি ভাটা মালিকদের। বিপুল পরিমাণ কাঁচা ইট গলে যাওয়ায় এগুলো অপসারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভাটা শ্রমিকদের।
আমতলী উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতি সূত্র জানায়, আমতলী উপজেলায় ২১টি ও তালতলী উপজেলায় ২টিসহ মোট ২৩টি ইট ভাটা রয়েছে। গত ১৬ ও ১৭ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। বর্ষণে ২৩টি ইট ভাটার প্রায় ১ কোটি কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। এতে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ভাটা মালিকরা। তারা ইট বানিয়ে শুকানোর জন্য মাঠে এবং শুকনো ভাটার মাঠে স্তূপ করে রাখেন। অনেকেই আবার ইট পোড়ানোর জন্য চুল্লিতে দিয়ে শুক্রবার আগুন ধরানোর দিন ধার্য কনেন। এ অবস্থায় বৃষ্টি শুরু হলে পলিথিন দিয়ে ঢেকেও কাঁচা ইট রক্ষা করা যায়নি। এতে অধিকাংশ ভাটার কাঁচা ইট পানিতে গলে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। যে সব ভাটার মালিকরা চুল্লিতে সাজিয়ে আগুন দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। তাদের বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। চুল্লির সব ইট গলে মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন চুলি পরিষ্কার করাই তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রবিবার সকালে সরেজমিনে আমতলী উপজেলার সেকান্দারখালী গ্রামের জিমি ব্রিকস, ঘটখালীতে তালুকদার ব্রিকস, উরসিতলায় আকন ব্রিকস, গুলিশাখালীর কালীবাড়ী আইএস ব্রিকস, সাগর ব্রিকস ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানিতে লাখ লাখ কাঁচা ইট গলে মাঠের মধ্যে পড়ে আছে। অনেক ভাটায় দেখা গেছে, পোড়ানোর জন্য চুল্লিতে সাজানোর পর বৃষ্টি আসায় তা গলে এখন চুল্লির মুখ বন্ধ হয়ে গেছে।
কুকুয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের আরএনটি ইটভাটার মালিক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম সোহাগ জানান, তার প্রায় ৫ লাখ কাঁচা ইট বৃষ্টির পানিতে গলে নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, শুকনো ইট পোড়ানোর জন্য চুল্লিতে সাজিয়ে ছিলাম। বৃষ্টির পানিতে তা গলে যাওয়ায় তা এখন অপসারণ করাই দুরূহ হয়ে পড়েছে।
আমতলী উরসি তলার আকন ব্রিকসের মালিক কামাল আকন জানান, বৃষ্টির হাত থেকে পলিথিন দিয়ে ঢেকেও কাঁচা ইট রক্ষা করা যায়নি। বৃষ্টিতে প্রায় কয়েক লাখ ইট গলে গেছে। প্রতিটি কাঁচা ইট বানাতে মাটি এবং শ্রমিক বাবদ প্রায় ৫ টাকা খরচ হয়। গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রামের আইএস ব্রিকসের মালিক মো. ফারক গাজী জানান, বৃষ্টির পানিতে তার প্রায় ৪ লাখ কাঁচা ইট পানিতে গলে গেছে।
আমতলী ইউনিয়নের সেকান্দারখালী গ্রামে অবস্থিত জিমি ইট ভাটার মালিক আবুল বাশার নয়ন মৃধা জানান, তার প্রায় ১০ লাখ কাঁচা ইট পানিতে ভিজে নষ্ট হওয়ায় প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। চাওড়া ইউনিয়নের ঘটখালী গ্রামের তালুকদার ব্রিকসের মালিক মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার জানান, বৃষ্টির পানিতে তার প্রায় কয়েক লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে।
"