বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
আসল এসপির হাতে ধরা পড়ল ভুয়া এসপি
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপারের নাম ভাঙিয়ে যশোরের শার্শায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে যশোর পিবিআই।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টায় মাদারীপুরের মৈশরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় শার্শা থানায় একটি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা হলেন- সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আহসান হাবিব ও তার স্ত্রী মাদারীপুরের মৈশরচর এলাকার খাদিজা। আহসান হাবিব রবিউল ইসলাম পরিচয় দিয়ে কখনো নিজেই মোবাইল-টেলিফোনের মাধ্যমে কণ্ঠ পাল্টে মেয়ে সেজে কথা বলতেন আবার কখনো তার স্ত্রীকে দিয়ে ফোন করে প্রতারণা করতেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আজিজুল হক জানান, শার্শা উপজেলার কায়রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলামের কাছে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ০১৩১৪-৫৪৭৪৬৬ নম্বর থেকে মোবাইল ফোন করেন এক নারী। এ সময় তিনি নিজেকে পিবিআই এসপি দাবি করে বলেন, আমি পিবিআই যশোর জেলার এসপি রেশমা শারমিন বলছি। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। যশোর জেলার শার্শার কায়রা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন যা করছেন, তা কি ঠিক করছে? আগামীতে আপনাকে চেয়ারম্যানের নমিনেশন পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেব। আপনার প্রতিপক্ষের কিছু লোকের নাম দেন। তখন শরিফুল ইসলাম তাকে কিছু লোকের নাম দেন। এরপর এসপি পরিচয়দানকারী ওই নারী শরিফুল ইসলামকে বলেন, আমার সাব-ইন্সপেক্টর রবিউল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন।
এই বলে অপরপ্রান্ত থেকে মোবাইল ফোনটি এক পুরুষ ব্যক্তির কাছে দেওয়া হয়। এ সময় নিজেকে এসআই রবিউল ইসলাম পরিচয় দিয়ে শরিফুল ইসলামকে বলেন, এসপি স্যার এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ঢাকায় যাবেন। তাই ২ লাখ টাকা দিতে হবে। এতে সন্দেহ হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম বিষয়টি পিবিআই কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে অবস্থান শনাক্তের পর বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় মাদারীপুরের মৈশরচর এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসআই নুর জামালের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান চালায়। সেখান থেকে পিবিআইয়ের এসপি পরিচয়দানকারী খাদিজা নামে এক নারীকে নিজ বাবার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বাড়ি থেকে তার সহযোগী এসআই রবিউল ইসলাম পরিচয়দানকারী স্বামী আহসান হাবিবকেও গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পিবিআই কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা ও চাঁদা দাবির কথা স্বীকার করেন।
পিবিআই যশোরের এসপি রেশমা শারমিন জানান, গ্রেপ্তার দুই প্রতারক মাদারীপুরের হায়দার কাজী জুট মিলে চাকরি করেন। এর আড়ালে তারা প্রতারণা ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। এরা মূলত বিভিন্ন লোকের কাছে ভুয়া পরিচয় দিয়ে নানাভাবে প্রতারণা করে আসছেন। আহসান হাবিব একজন চিহ্নিত প্রতারক। তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা থানায় ১০টি এবং ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মিলে মোট ১১টি মামলা রয়েছে।
"