মাহমুদুল হাসান, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)

  ০৬ জুন, ২০২৩

জাহাজমারায় পর্যটন শিল্পে সম্ভাবনা

দেশের সর্ব দক্ষিণে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নে অবস্থিত জাহাজমারা সমুদ্রসৈকত। ওই সৈকতের অপরূপ সৌন্দর্যের টানে প্রতিদিনই আসছেন পর্যটক। দিনদিন বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা। কিন্তু সেখানে দরকারি অবকাঠামো থাকলে জাহাজমারা সমুদ্রসৈকত সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয় ও পর্যটকরা। তারা বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ ভালো রাস্তাঘাট এবং হোটেল মোটেল থাকলে সরকারও আয় করতে পারে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। পর্যটন মৌসুম এলেই নৌপথে ট্রলার আর সড়ক পথে মোটরসাইকেলে করে পর্যটকরা আসেন জাহাজমারায়।

উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার এবং চরবগলা সøুইসগেট স্টেশন থেকে এক কিলোমিটার দূরে বেড়িবাঁধের বাইরে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে জেগে আছে জাহাজমারা সমুদ্রসৈকত। দীর্ঘ সৈকতের পাশে রয়েছে বন বিভাগের ঘন বনাঞ্চল। এসব বনে আছে বক, চিল, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, টিয়া, ময়না, ঘুঘুসহ নানা প্রজাতির পাখি। আর শীতকাল মুখর থাকে অতিথি পাখির কলকাকলিতে। সমুদ্রের নীল ঢেউ আর বনাঞ্চলের সবুজ প্রকৃতি জাহাজমারাকে দিয়েছে অনন্য বৈশিষ্ট্য।

চারদিকে সমুদ্রের বিশাল জলরাশি আর সৈকতে লাল কাঁকরার ছুটোছুটি। শেষ বিকেলে দিগন্ত রেখায় সূর্যাস্তের দৃশ্য। ভোরের বেলায় কুয়াশার আভা ভেদ করে পূর্ব আকাশে সাগর জলের ভেতর থেকে লাল সূর্য উঠার মনোরম দৃশ্য, এর মাঝে সকাল-দুপুর-বিকেল পাখির কলকাকলিতে মুখর গোটা মৌডুবি দ্বীপ। দ্বীপটি ঘিরে আছে নদী আর সাগর। ভোরের স্নিগ্ধ আলো, গোধূলীর ম্লান আলো আকাশে ছড়িয়ে দেয় আবির রং।

জাহাজমারা সমুদ্রসৈকত ছবির মতোই সুন্দর। সমুদ্রসৈকতের পাশাপাশি এখানে রয়েছে নদী, পুকুর ও বিল। খাবারের জন্য রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক সুস্বাদু মাছ, দেশি হাঁস-মুরগি, গরু ও মহিষের দুধ ও মাংস। এছাড়া মহিষের দুধের দই এবং শীতে খেজুরের রস। এছাড়া রয়েছে নানা রকম শাক-সবজি। সৈকতের পাশেই বালুরচরে পাওয়া যায় আগাম তরমুজ।

ঈদ, পূজা ও রাশ পূর্ণিমাসহ সব উৎসবে জাহাজমারা সমুদ্রসৈকত থাকে জমজমাট।

স্থানীয়দের দাবি, জাহাজমারাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা হলে বদলে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য। পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান। অর্থনৈতিক উন্নয়নেও এগিয়ে যাবে মৌডুবি।

‘আমাদের জাহাজমারা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে। সংগঠনটি গড়ে তুলেন স্থানীয় যুবকরা। তারা সৈকতের পরিচ্ছন্নতা এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করেন। ওই সংগঠনের সভাপতি মো. নাইমুর রহমান। তিনি বলেন, এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক আসেন। শুধু দরকার মানসম্মত আবাসিক হোটেল। যাতে দূরদূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা সারাদিন বিচে ঘোড়াঘুড়ি করে নিরাপত্তার সঙ্গে রাত যাপন করতে পারেন। আর সেই সঙ্গে জাহাজমারার যাতায়াতের ব্যবস্থাও উন্নত করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close