পলাশ সাহা, লক্ষ্মীপুর

  ৩১ মে, ২০২৩

মালিকানা জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে মালিকানাধীন কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেছেন এক ব্যক্তি। এ দিকে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী বলেছেন সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী জমিটি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। তাই এতে কারো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আইনগত ভিত্তি নেই।

মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের একটি পত্রিকা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কার্তিক চন্দ্র অধিকারী এ অভিযোগ করেন। এ সময় কার্তিকের ভাই বিকাশ চন্দ্র অধিকারীও উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে মাটি কেটে নেওয়ার ঘটনার বিচার চেয়ে কার্তিক অধিকারী চলতি বছরের ২ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মাহমুদের মাধ্যমে রিট করেন। এতে ২৫ জানুয়ারি বিচারক কে এম কামরুল কাদের ও মোহাম্মদ আলী বেঞ্চ বিষয়টি দুই মাসের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেন। কিন্তু চার মাস শেষ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মীমাংসা করে দেননি জেলা প্রশাসক। একই দাবিতে গত ১০ মে কার্তিক ফের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। একাধিকবার আবেদন করলেও জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেননি বলে জানান কার্তিক ও তার ভাই বিকাশ চন্দ্র।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর রইছা খাতুনদের কাছ থেকে কার্তিক চন্দ্র অধিকারীর দাদা কৃষ্ণ চন্দ্র অধিকারী রামগতির চরগাজী ইউনিয়নের দক্ষিণ টুমচর মৌজায় ১০ একর ৩৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এসএ খতিয়ানেও কৃষ্ণ চন্দ্রের নামেই জমিটি রেকর্ডভুক্ত হয়। এরপর থেকে তিনি ওই জমির খাজনা পরিশোধ করেছেন। পরে ওয়ারিশ সূত্রে কৃষ্ণ চন্দ্রের ছেলে হরিহর অধিকারী ও ইন্দুভোষণ অধিকারী এ জমির মালিক হন। এর মধ্যে হরিহর ৪ একর ৬০ শতাংশ জমির মালিক হয়েছেন। হরিহরের মৃত্যুর পর তার ৩ ছেলে কার্তিক, বিকাশ ও কানু লাল অধিকারী ওই জমির মালিক হন। এর মধ্যে ইন্দুভোষণের নামের কিছু জমি খাস খতিয়ানে চলে যায়। এ নিয়ে তিনি ২০২০ সালে ৮ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন।

২০২২ সালে মার্চ মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী সাবেক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রবিউল হাসান কাজলের নির্দেশনায় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. সানা উল্যা, চরগাজী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাছির উদ্দিন, নারী সদস্য মনোয়ারা বেগমের স্বামী মামুন মিয়া ও দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি ৭০ শতাংশ জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যায়। কিন্তু এ জমি খাস ছিল না। এ জমির মালিক কার্তিক ও তার দুই ভাই। জমিগুলো তারা বর্গাচাষিদের মাধ্যমে চাষাবাদ করে আসছিলেন। মাটি কেটে নেওয়ার সময় চাষিরা বাধা দিলে তাদের মারধরের হুমকি দেওয়া হয়।

কার্তিক চন্দ্র অধিকারী বলেন, আমাদের জমিতে ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ হতো। কিন্তু মাটি কেটে নেওয়ায় ওই জমিটি এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। জমিতে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এর বিচার চাই।

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী জমিটি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। খাস জমি থেকে আমরা মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাট করেছি। আমরা মালিকানাধীন কারো জমির মাটি কাটিনি। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। ওই জমির পাশেই ৭০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এখন ১৬ ঘরের নির্মাণকাজ চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close