প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৬ মার্চ, ২০২৩

যানজটে যে রোগের শিকার নগরবাসী

প্রতিদিনের সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে যানজট। এ যানজটের প্যাঁচে পড়ে ঠিক সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায়ই যুদ্ধ করতে হয় সবাইকে। ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে অনেক সময় টাকা গুনতে হয় দ্বিগুণ। তবে যানজট কি শুধু আমাদের সময় আর অর্থই লুট করছে, নাকি এর সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে আরো অনেক কিছু?

সারা দিনের কাজ সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর বিকল্প নেই। অথচ বর্তমান যানজটের কারণে ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর উপায়ও নেই। নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে হাতে বেশ সময় নিয়ে রাস্তায় নামলেও ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে বেশ হিমশিম খেতে হয় সবাইকে। এ ঝক্কি ঝামেলাকে সামাল দিলেও শরীর মোটেও সামাল দিতে পারছে না, তা কি জানেন?

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এমনটাই মনে করছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান যিপজেটের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, এশিয়ার শহরগুলোতে বাস করা সবচাইতে স্ট্রেসফুল বা মানসিক চাপের ব্যাপার। যার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ঢাকার যানজটকে।

মানসিক চাপ ছাড়াও যানজটের আরো যেসব স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে তাহলো মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। দীর্ঘক্ষণ যানজটে বসে থাকার কারণে এমন অনুভূতি হওয়া এখন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়।

তবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শুধু যে ছোট ছোট রোগ রয়েছে তেমনটি নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট রোগগুলোর সঙ্গে সঙ্গে জটিল রোগের কারণও হয়ে দাঁড়িয়েছে এই যানজট।

এ বিষয়ে বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ড. কাজী সাইফুদ্দিন বলেছেন, ঢাকার যানজট ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে প্রতিনিয়ত। কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, যখন যানজট শুরু হয়, তখন গাড়ির ইঞ্জিন চালু থাকে। এ সময় গাড়ির ধোঁয়া একই জায়গায় উড়ে বেড়ায়, যাতে মারাত্মকভাবে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার কারণে বাড়ছে হাঁপানি, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ইন্টারস্টিসিয়াল লাঙ ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসারের মতো জটিল রোগ। বাতাসের উচ্চমাত্রায় সিসা মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের ওপরও প্রভাব ফেলে। দীর্ঘদিন ধরে এমন বাতাসের নিঃশ্বাস নিলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে আসে, কিডনি, হৃদযন্ত্র, প্রজননতন্ত্রের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। সেই সঙ্গে গাড়ির হর্নের কারণে শ্রবণশক্তির সমস্যা তো রয়েছেই। দীর্ঘ যানজটের কারণে এ সময় উদ্বেগ বেড়ে যায়। মেজাজ খিটখেটে হওয়ার পাশাপাশি বাড়ে উচ্চ রক্তচাপও।

এ বিষয়ে সম্প্রতি গবেষণা করেছেন গবেষক জিং হুয়াং। ৪০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী প্রায় আড়াই লাখ মানুষের ওপর এ গবেষণা করা হয়। দীর্ঘদিনের এই গবেষণায় মানুষের শরীরে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম কণা খুঁজে পেয়েছেন তিনি।

তাই নানা শারীরিক অসুস্থতা থেকে বাঁচতে যানজট কমানোর বিকল্প নেই। যানজটে বেশি সময় যায় মূলত ট্রাফিক সিগন্যালের কারণে। আপাতত এই ট্রাফিক সিগন্যালের সময় কমিয়ে আনতে পারলে যানজট থেকে পুরোপুরি মুক্তি না পেলেও যানজটে সময় ব্যয় অনেকটা কমে আসবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close