নিজস্ব প্রতিবেদক
স্টেট ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী
দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা হচ্ছে
দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ভবিষ্যতের রূপকল্পের বাংলাদেশ গড়তে হলে ঔপনিবেশিক আমল থেকে চলা মুখস্থনির্ভর আর পরীক্ষায় উগরে দেওয়া শিক্ষাব্যবস্থা দিয়ে চলবে না। বরং শিক্ষাকে আনন্দময় করতে হবে। সমস্যা সমাধানে দক্ষতা বাড়াতে হবে। আত্মশক্তিতে বলীয়ান হতে হবে।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এসইউবি) ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপু মনি এসব কথা বলেন।
রূপগঞ্জের কাঞ্চনে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে এই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সম্মতিতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এবং স্নাতকদের সনদ বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে দীপু মনি বলেন, রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার জন্য কৌশলগত পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। ন্যাশনাল ব্লেন্ডেড এডুকেশন মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্তকরণের পর্যায়ে রয়েছে। অবকাঠামোর পাশাপাশি শিক্ষায় প্রযুক্তির মেলবন্ধন করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের অবকাঠামোর উন্নয়ন করেছি, তার সঙ্গে প্রযুক্তির যে মেলবন্ধন ঘটাতে হবে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। চতুর্থ সম্ভাবনার দার উন্মুক্ত। সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে। সে হিসেবে আমাদের শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা খেলতে খেলতে কোডিং শিখতে পারে সে ব্যবস্থা করছি। যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সফল হয়।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, সমাজে আমরা একজন কৃষক বা শ্রমিককে বুদ্ধিজীবী বলি না, বলার কথা ভাবতেই পারি না। কারণ তাদের কায়িক পরিশ্রম সমাজ-নির্দিষ্ট বুদ্ধিজীবিতার সংজ্ঞায় পড়ে না। কিন্তু তারা যদি তাদের বুদ্ধি খাটিয়ে ক্রমাগত খাদ্য ও বস্তুসামগ্রী উৎপাদন করে না যেতেন, এ দেশটির বেঁচে থাকাই অসম্ভব হতো। কোভিডে বিপর্যস্ত ইউরোপে ঘটতে থাকা এক অবাস্তব যুদ্ধের অভিঘাতে দিশাহারা এ সময় অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তার মোকাবিলা করার জন্য এখন দেখতে পাচ্ছি সবাই কৃষকদের, শ্রমিকদের এবং কৃষকদের যেসব সন্তান বিদেশে অমানসিক কায়িক পরিশ্রম করে বিদেশি মুদ্রা পাঠায়, তাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।
২০০২ সালে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এসইউবি) প্রতিষ্ঠিত হয়। এবারের ষষ্ঠ সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি অনুষদের ১ হাজার ৮২৫ জন ছাত্রছাত্রীকে সনদ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শিতা ও ফলাফল অর্জনকারী মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সম্মাননা পদক দেওয়া হয়। এর মধ্যে চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেলী আক্তার সেতু, জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জাহাঙ্গির আলম এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আলিফ খান। এ ছাড়া ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন সাতজন এবং ডিনস্ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ৫৫ জন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আনোয়ারুল কবির। বক্তা হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ডাক্তার এ এম শামীম।
"