চলতি বছরের প্রথম আট মাসে যৌতুকের কারণে ৫৩ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। একই সময়ে দেশে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২০৫টি। সোমবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানায় নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ফওজিয়া মোসলেম।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২০৫টি দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ সালে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল ২২৫টি। ২০২১ সালে ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে সাতটি। ২০২২ সালে জানুয়ারি থেকে আগস্টের মধ্যেই ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে সাতটি। ২০২১ সালে যৌতুকের কারণে খুন হয়েছেন ৪৫ জন। আর ২০২২ সালে অক্টোবর পর্যন্ত যৌতুকের কারণে খুন হয়েছেন ৫৩ জন। বাল্যবিয়ে বাড়ার কারণ হিসেবে বলা হয়, করোনা মহামারির ভয়াবহ সংক্রমণকালে দেশের নারী ও কন্যাশিশুরা দ্বিগুণ হারে পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। বাল্যবিয়ে বেড়ে যাওয়া এর অন্যতম কারণ। দেশে করোনা মহামারির দুই বছরে বাল্যবিবাহ বেড়েছে ১০ শতাংশ। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জাতীয় কনভেনশনবিষয়ক অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্যারিস্টার রাশেদুল হক অমিত।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদে সংরক্ষিত ১৩টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুসারে দেখা যায়, নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। নির্যাতন থেকে রক্ষা পায়নি দুই বছরের শিশু থেকে ৭৫ বছরের বৃদ্ধা। ২০২১ সালে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি ৮১০টি। দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২২৫টি, ধর্ষণ চেষ্টা ১৯২টি, উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে ৯৬টি।

ব্যারিস্টার রাশেদুল হক বলেন, ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সি মেয়েরা সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এছাড়া আগের তুলনায় তরুণরা ধর্ষণের মতো অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহারের কারণে বাড়ছে অপরাধ, নারী ও কন্যারা ভার্চুয়ালি যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম, অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. কাবেরী গায়েন।

"