নিজস্ব প্রতিবেদক
রেস্টুরেন্টের আড়ালে মদ বিক্রি

রাজধানীর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের কিংফিশার নামে রেস্টুরেন্টে ব্যবসার আড়ালে মদের বার চালিয়ে আসছিল মো. মুক্তার হোসেন নামে এক ব্যক্তি। এ বারে নিয়মিত বিক্রি হয়ে আসছিল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিয়ার ও মদ। যাতায়াত ছিল নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের। দীর্ঘদিন ধরে মদ বিক্রি করে এলেও রেস্টুরেন্টটির ছিল না বারের নিবন্ধন।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) রাতে ১৩ নম্বর সেক্টরের গরিবে নেওয়াজ রোডে কিংফিশার রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে ৫০০ বোতল মদ এবং ছয় হাজার ক্যান বিয়ার জব্দ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ডিবি পুলিশের কাছে তথ্য আসে, রাজধানীর ১৩ নম্বর সেক্টরের গরিবে নেওয়াজ এভিনিউ রোডের একটি বাড়িতে শত শত ছেলেমেয়ে গান-বাজনার নামে ডিজে পার্টি করছে এবং সেখানে প্রচুর পরিমাণে মদ বিক্রি হচ্ছে। এর আগেও উত্তরার সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে গণ্যমান্য অনেকে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন, বাড়িটিতে সবসময় নৈরাজ্যকর পরিবেশ বিরাজ করে।
তিনি আরো বলেন, তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ডিবির কয়েকটি টিম রাত ৯টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখে, ভয়াবহ অবস্থা। প্রথমে বাড়িটির সাত তলায় গিয়ে দেখা যায়, অনেক ছেলেমেয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। পরে ভেতরে গিয়ে দেখেন, সেখানে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি মদ ও বিয়ার মজুদ রয়েছে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় গিয়েও একই অবস্থা দেখতে পান।
পরে অভিযান চালিয়ে দামি ব্র্যান্ডের প্রায় ৫০০ বোতল বিদেশি মদ এবং প্রায় ছয় হাজার বিয়ার ক্যান জব্দ করা হয়। মদ ও বিয়ার আমদানির ও বারের লাইসেন্স চাওয়া হলে কর্তৃপক্ষ কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় সেখান থেকে আমরা ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করি। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় তাদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন চাওয়া হয়।
ভবনটিতে বারের কার্যক্রম কীভাবে চালাত এমন প্রশ্নে ডিবি প্রধান বলেন, কিংফিশার রেস্টুরেন্টের নামে ওই ভবনের এসব কার্যক্রম (বার) চলত। তবে মদ বিক্রির তাদের কোনো নিবন্ধন ছিল না। কিন্তু কথিত এই বারের মালিক মুক্তার হোসেনের রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জে আরো কয়েকটি বার রয়েছে।
মুক্তার হোসেনের কাছে বারের কয়টি লাইসেন্স আছে প্রশ্ন করা হলে হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা গতকাল যে ভবনে অভিযান চালিয়েছি, সেখানকার ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ম্যানেজার আমাদের বলেছেন, মিরপুর, গুলশান ও নারায়ণগঞ্জসহ পাঁচটি বার চালান মুক্তার। সেগুলো একই লাইসেন্সের কি না, তা আমরা জানি না।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ম্যানেজার আরো জানান, মুক্তার ২০০৮ সালের দিকে বারিধারায় এভিলিয়ন নামে একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ করতেন। লেকভিউ নামে গুলশান-২ এর একটি রেস্টুরেন্টেও তিনি কাজ করতেন। ওয়েটার থেকে এখন তিনি শত কোটি টাকার মালিক। যুক্তরাষ্ট্রে তার বাড়ি-গাড়ি আছে। স্ত্রী-সন্তানরা সেখানেই থাকেন।
"