গাজী শাহনেওয়াজ

  ০৩ অক্টোবর, ২০২২

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভোটার ৬৩১৫৯ জন

দ্বিতীয় জেলা পরিষদ নির্বাচনে সারা দেশের ৬১ জেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচন করতে ভোট দেবেন ৬৩১৫৯ জন ভোটার। এরমধ্যে নারীর চেয়ে পুরুষ ভোটার বেশি। জেলা পরিষদের পুরুষ-নারী ভোটার যথাক্রমে ৪৮ হাজার ২৩৬ জন ও ১৪ হাজার ৯২৩ জন। স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্যরা ভোট দিয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচন করেন। অর্থাৎ এই নির্বাচনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই ভোটার। তবে তিন পার্বত্য জেলায় জেলা পরিষদের ভোট হয় না।

উল্লেখ্য, সারা দেশে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৬১ জেলার মধ্যে ২৬টিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৬৬ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৯ জন প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তা ছাড়া ফেনী জেলা পরিষদ নির্বাচনের সব পদে প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার অনন্য নজির তৈরি হয়েছে এ নির্বাচনে। তবে সংশ্লিষ্ট জেলার সদস্য পদে ভোট হবে। খবর ইসি সূত্রের।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার তথ্যমতে, চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১৬২ জন। চূড়ান্ত বাছাইয়ের পর বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ১৪২ জন। সাধারণ সদস্য পদে ১ হাজার ৯৮৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাদের মধ্যে বৈধতা পান ১ হাজার ৭৪৪ জন। আর সংরক্ষিত সদস্য পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৭১৫ জন। এরমধ্যে বৈধতা পান ৬৭৫ জন।

কিন্তু আপিল নিষ্পত্তি ও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং হাইকোর্টের আদেশ প্রতিপালন শেষে চেয়ারম্যান পদে ফাইনালি নির্বাচনী মাঠে লড়ছেন ৯৬ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৫১৩ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৬২২ জন। আদালতের আদেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাচনী সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে কমিশন।

ইসির তথ্যানুযায়ী, জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে ১৭ অক্টোবর। নির্দলীয় এ নির্বাচনে সব ভোট হবে যন্ত্রের সহায়তায় অর্থাৎ আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। তবে দেশের আরেকটি বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়ায় মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের সঙ্গে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে। কয়েকটি আসনে জাতীয় পার্টিসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও তারাও নৌকার দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছে কোণঠাসা।

আগের আইন অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট জেলার অধীনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সদস্যরাই জেলা পরিষদ সদস্যদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতেন। অর্থাৎ সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়র এবং কাউন্সিলর বা সদস্যরা ভোট দিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও পাঁচজন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত করতেন।

কিন্তু সংশোধিত আইনে জেলা পরিষদের সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলার সংখ্যার সমান। আর নারী সদস্য সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলার উপজেলা চেয়ারম্যানদের মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ, তবে দুজনের কম নয়। অর্থাৎ একেক জেলা পরিষদের সদস্যের সংখ্যা হবে একেক রকম, সংশোধনের আগে যেটা ২১ জন নির্দিষ্ট করে দেওয়া ছিল।

আগের আইন অনুযায়ী, পরিষদের মেয়াদ শেষ হলেও পরের নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আগের পরিষদই দায়িত্ব পালন করত। সংশোধিত আইনে এর পরিবর্তে প্রশাসক বসানোর বিধান আনা হয়েছে। সেই ক্ষমতাবলেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রশাসক বসানোর আদেশ জারি করে।

জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদ ৪৬৩টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদ ১৭২টি। চেয়ারম্যান পদ রয়েছে ৬১টি। ৪৭৭টি ভোটকেন্দ্রের ৯৫৫টি ভোটকক্ষে এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে, এই নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলেছে ইসি। এ লক্ষ্যে শনিবার (৮ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সভা করবে। সভায় সিইসি সভাপতিত্ব করবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা নেই ইসির। তবে যেহেতু নির্বাচন, তাই বিশৃঙ্খলা ঘটতে পারে। সতর্কতার অংশ হিসেবে নানামুখী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে ইসি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close