ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

  ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ঘাটাইলে পারিবারিক দ্বন্দ্বে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ছয়ানী বকশিয়া গ্রামে জমি দখল করাসহ বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে উঠেছে লুৎফর মল্লিকের বিরুদ্ধে। রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন ছোট ভাই আক্রাম হোসেন ফরহাদ। থানা সূত্রে জানা গেছে, এই দখল ও আগুন লাগানোর মূলে রয়েছে পারিবারিক কলহ ও দ্বন্দ্ব।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছয়ানী বকশিয়া বাজারের পাশেই বাজিতউল্যাহ মল্লিকের ছেলে আবদুল আজিজ মল্লিকের (৭০) বাড়ি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই বাড়িতেই বাস ছিল আজিজ মল্লিকের অন্য তিন ভাইয়ের। তাদের সঙ্গে আজিজ মল্লিকের বনিবনা না হওয়ায় অন্য সব ভাই (অভিযোগকারীর চাচারা) বাড়ি থেকে বিদায় নিয়েছেন। তার সন্তানদের মধ্যেও বিবাদ চলছে। ছেলে আবদুল লতিফ বছর দশেক আগে বিয়ের পর একটি মেয়ে সন্তান রেখে মারা গেছেন। চার ভাই লুৎফর, লতিফ, ফরিদ, ফরহাদের একমাত্র বোন আর্জিনাকে বিয়ে দিয়েছেন পাশের গ্রামে। প্রতিবেশীরা জানান, এদের ভাইদের মধ্যে মিল না থাকায় প্রায়ই ঝগড়া লেগেই থাকে। বড় ছেলে লুৎফর মল্লিকের চতুরতা ও স্বার্থবাদিতার কারণে পরিবারটির মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এদের মধ্যে কখন কী ঘটে সেটা বলা যায় না। প্রায় এক যুগ আগে হঠাৎ করে দেখা গেল লুৎফর মল্লিককে মাসখানিক ধরে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরবর্তী সময়ে শোনা গেল, এক লোকের ১০ লাখ টাকা নিয়ে ভাগছিল লুৎফর। তারপর লুৎফরকে আটকে রেখেছিল সেই লোক। তখন নিরুপায় হয়ে অন্য ভাইয়েরা টাকা পরিশোধ করে তাকে ছাড়িয়ে এনেছিল। ভাইদের দাবি সে টাকাও তাদের পরিশোধ করেনি আজ পর্যন্ত।

ভাই আনসার কমান্ডার ফরিদ মল্লিক জানান, তারা চার ভাই এক বোন। এর মধ্যে দুই ভাইয়ের সম্পত্তি লুৎফর মল্লিক বৃদ্ধ বাবা আ. আজিজ মল্লিককে ভুল বুঝিয়ে দলিল করে নিয়েছে। এ কারণে ফরহাদ বাদী হয়ে ঘাটাইল থানায় অভিযোগ করেন। মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার ইনছান আলী বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ দফায় দফায় বসেছি। লুৎফরের কারণে কোনো সুরাহা করতে পারিনি।

মা লাইলী বেগম অভিমানে তার নিজের সন্তান নেই জানালেও বাবা আ. আজিজ জানালেন, তার ছেলে মেয়ে চারজন। এক ছেলে বিয়ের পর কন্যাসন্তান রেখে মারা গেলেও ওরা আরো তিন ভাই আছে। ছেলেদের নিয়ে বৃদ্ধ বয়সে বড়ই অশান্তিতে আছেন জানালেন তিনি। অভিযোগকারী ফরহাদের চাচা হেলাল মল্লিক বলেন, এর আগে বিভিন্ন কায়দায় আমাদের একে একে এই বাড়ি থেকে সরিয়ে দিয়েছে। আমার বড় ভাই আ. আজিজকেও কিছু বলতে পারি না, ভাতিজা লুৎফরকেও কিছু বলতে পারি না। আমাদের মতো নিরীহ মানুষের আর কী করার আছে।

বড় ভাই লুৎফর মল্লিক বলেন, আব্বা আমার নামে জমি ইচ্ছা করে লিখে দিয়েছেন। আমি এ বিষয়ে কাউকে জানাইনি। এখন আমার সঙ্গে আশপাশের সবাই শত্রুতা করছেন। থানায় অভিযোগকারী আক্রাম হোসেন ফরহাদ মল্লিক বলেন, আমি আমার স্ত্রী সন্তান বাড়ি রেখে চাকরি করি ঢাকায়। আমার বড় ভাই লুৎফর আমাদের ভাইদের সবার হক বাবার নিকট থেকে ভুলিয়েভালিয়ে হস্তগত করেছেন। আমার মুদি দোকানে বিনিয়োগকৃত ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আমার মার্কেট বেদখল দিয়েছেন। বাড়ি ঘরে আগুন দিয়েছেন। ঘরের মেঝের মাটি কেটে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে ঘাটাইল থানায় একটি অভিযোগ করেছি। কিন্তু কি কারণে প্রশাসন কোনো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না জানি না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close