জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ

  ১৮ আগস্ট, ২০২২

সৌদিতে নির্যাতনের শিকার সেই তরুণী এখন দেশে

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে দেশে ফিরলেন সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার শিল্পী আক্তার নামের সেই তরুণী। শিল্পীর দেশে ফেরায় স্বস্তি নেমে এসেছে তার পরিবারে। বুধবার (১৭ আগস্ট) শিল্পীর দেশে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার বাবা চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের তৈইগাঁও গ্রামের আবদুল মজিদ। তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবে আমার মেয়েটি খুব দুরবস্থার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছিল। তাকে সবসময় মারধর করত মালিক। একবার খেতে দিলে অন্যবার দিত না। যার ফলে শিল্পীকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম।’ আব্দুল মজিদ বলেন, ‘সরকার, সৌদি দূতাবাস ও সাংবাদিক ভাইদের কারণে এত দ্রুত আমি আমার মেয়ে ফিরে পেয়েছি। আমি বাংলাদেশ সরকারসহ সবার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।’

নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিল্পী আক্তার বলেন, ‘আমি যে মালিকের বাসায় থাকতাম সেই মালিক ও তার পরিবারের সদস্যরা আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করত। খাবার দিত না। সামান্য ভুলত্রুটি হলেই লাঠি দিয়ে পেটাত। এ ছাড়াও তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করত। এমনকি দেশে আমার মা-বাবার সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দিত না তারা। বাড়িতে কথা বলতে চাইলেই আমাকে মারধর করা হতো।’ শিল্পী আক্তার আরো বলেন, ‘দেশে ফেরার সময় আমার সব জিনিসপত্র রেখে দিয়েছে তারা। সামান্য কয়েকটা কসমেটিকস ছিল, সেগুলোও আনতে দেয়নি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ‘মেয়েটি দেশে ফিরে এসেছে জানতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। বিষয়টি জানার পর থেকেই আমরা সরকারিভাবে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করি। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়েও যোগাযোগ করেছি, যাতে মেয়েটিকে দ্রুত সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়।’

উল্লেখ্য, এর আগে ‘তুমরার কাছে আমি ভিক্ষা চাই। আমারে দেশে ফিরাইয়া নেও। তিন বছর ধইরা আমারে আটকাইয়া রাখছে। আমারে ধরে-মারে। মালিকে মারে, মালিকের পুলা-পুইরে মারে। আমারে খানি দেয় না, একবার দিলে আরেকবার দেয় না। ঘরের ভেতরে তালা মাইরা তরাকে। দেশে ফিরাইয়া না নিলে আমারে মাইরালাইব, লাশ কইরা বাংলাদেশে পাঠাইব।’ এমন একটি ভিডিওবার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই ভিডিওবার্তার পর বিভিন্ন পক্ষের তৎপরতা ও সহযোগিতায় তার দেশে ফিরে আসার পথ সুগম হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close