চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদায় চট্টগ্রাম মহানগরীর সর্বত্র পালিত হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সোমবার সকালে নগরীর নন্দনকানন থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আয়োজিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাঙালির জাতীয় জীবনে আগস্টের ভয়াবহতা, নৃশংসতা ও শোকের কোনো শব্দ ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। এই দিনে ইতিহাসের নৃশংস ও মর্মস্পশী এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা হারিয়েছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। জাতির পিতার জীবন দর্শন, সততা ও বিচক্ষণতা অনুসরণ করেই তার আদর্শের ধারক ও বাহক হতে পারলেই এগিয়ে যাবে দেশ সমৃদ্ধ হবে জাতি । চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, মোহাম্মদ জাবেদ, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, হাসান মুরাদ বিপ্লব, গাজী মো. শফিউল আজম, মো. সাহেদ ইকবাল বাবু, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, মোহাম্মদ ইসমাইল, মো. ইলিয়াছ, মো. নুরুল আমিন, পুলক খাস্তগীর, নুর মোস্তফা টিনু, সংরক্ষিত কাউন্সিলর জোবাইলা নার্গিস খান, জেসমিন পারভীন জেসি, আঞ্জুমান আরা, শাহীন আকতার রোজী, হুরে আরা বেগম, তসলিমা বেগম (নুরজাহান), জাহেদা বেগম, রুমকী সেনগুপ্ত সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী, অতি. প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, চসিক সিবিএ সভাপতি ফরিদ আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
এছাড়া জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকালে কালোব্যাচ ধারণ, নগর ভবন চত্বরে কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও বড়পোলস্থ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পমাল্য অর্পণ, চসিক সম্মেলন কক্ষে খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মুনাজাত, টাইগারপাস্থ বিন্ন্যাঘাস প্রকল্প এলকায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, চসিক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীর সভাপতিত্বে চসিক জেনারেল হাসপাতালে ফ্রি চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। উল্লিখিত কর্মসূচিতে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
মহানগর আওয়ামী লীগ : দিবসটি উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নগরীর দারুল ফজল মার্কেটস্থ কার্যালয়ে কোরআন তেলাওয়াত মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। মহানগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন, সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন : চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে সোমবার (১৫ আগস্ট) জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদ ও জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম সরোয়ার কামাল।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯ জন শহীদ হয়েছিলেন। ঘাতকদের একটি উদ্দেশ্য ছিল, জাতির পিতার আদর্শ মুছে ফেলা। একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা যেতে পারে কিন্তু তার আদর্শ কখনো নিশ্চিহ্ন করা যায় না, হত্যা করা যায় না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ৩ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলেন, সেই তিন বছরে দেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছিল। তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে আবার দেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এসেছে।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন : স্বাধীনতার মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্ট সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) যৌথ উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে সকালে অর্ধনমিতভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় খতমে কোরআন, ১১টায় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সকাল সাড়ে ১১টায় ক্লাবের এস রহমান হলে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন আনিস শাহ জামে মসজিদের খতিব হযরত মাওলানা জামালউদ্দিন। আলোচনা সভার সভাপতি এবং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলহাজ আলী আব্বাস বলেন, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের বৃহত্তর সংগঠন হিসেবে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর থেকে এই দিনটি শোকাবহ হিসেবে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে আসছে। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শামসুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি শহীদ উল আলম। এ সময় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা, সহসভাপতি স ম ইব্রাহীম, যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সিইউজের সিনিয়র সহসভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটো, যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সবুর শুভ, প্রেস ক্লাবের অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, গ্রন্থাগার সম্পাদক মিন্টু চৌধুরী, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান, কার্যকরী সদস্য শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, দেবদুলাল ভৌমিক, মনজুর কাদের মনজু, বিএফইউজের সাবেক সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসিফ সিরাজ, তপন চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চক্রবর্তীসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলোর বর্তমান ও সাবেক নেতারা এবং বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
"