বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
ভারত থেকে ট্রাক প্রবেশে ১৫ মিনিট
বেনাপোলে পণ্য খালাসে দিনের পর দিন অপেক্ষা
ভারত থেকে একটি পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লাগে কিন্তু বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্য খালাস করতে দিনের দিন দিন অপেক্ষা করতে হয় ভারতীয় ট্রাকচালকদের। এ কারণে বেনাপোল বন্দরের ট্রাক টার্মিনালে শত শত ভারতীয় ট্রাক পণ্য খালাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে কয়েক দিন ধরে। এর ফলে স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ক্রমেই আমদানি বাণিজ্য কমে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ধস নামতে শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর থেকে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা প্রথমে যেসব পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেন সেসব পণ্যের কাগজপত্র নিয়ে বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখায় জমা দেন। সেখানে মেনিফেস্ট নম্বর (আইজিএম) দিয়ে অনলাইনে বিস্তারিত এন্ট্রি হয়ে ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ভারতের পেট্রাপোল পার্কিং থেকে ট্রাকগুলো নিয়ে চালক ও হেলপার চলে আসে কার্গো শাখায়। সেখানে অনলাইনে ট্রাক নম্বর, চালক ও হেলপারের বিস্তারিত এন্ট্রি হয়ে পণ্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। পরে একই ভাবে বন্দর কর্তৃপক্ষও সেগুলো এন্ট্রি করে রাখে। এরপর যেসব পণ্যবাহী ট্রাকের স্ক্যানিং ও ওজনের নির্দেশ থাকে সেগুলো করার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের নির্দিষ্ট শেডে (গুদাম) পোস্টিং দিলে সেখানে পণ্য আনলোড করা হয়। তবে শেডে জায়গা না থাকলে ট্রাক টার্মিনালে সেসব ট্রাকগুলো রাখা হয়। করোনার পর থেকে প্রতিদিন বেনাপোল বন্দরে ৩০০ থেকে ৩৫০ ট্রাক পণ্যবাহী ট্রাক আসছে ভারত থেকে। কিন্তু বন্দর থেকে পর্যাপ্ত পণ্য খালাস না হওয়ায় বন্দরে এসব পণ্য রাখা যাচ্ছে না। এসব ট্রাক রাখা হচ্ছে বন্দরের ট্রাক টার্মিনালসহ বন্দরের আশপাশের এলাকায়। ফলে পণ্য ও ট্রাকজট লেগে আছে বন্দরে। এ কারণে ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশের আগে এক মাসেরও বেশি সময় আটকে রাখা হয় বনগাঁর পরিবহন দপ্তরের নিয়ন্ত্রণকারী কালিতলা পার্কিংয়ে। এর ফলে এক একটি পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল। প্রতি বছর দেশের সিংহভাগ শিল্প-কারখানা ও গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রির মালামালের পাশাপাশি কেমিক্যাল, মোটর পার্টস, গাড়ির চেসিসসহ বিভিন্ন কাঁচামাল আমদানি হয়ে থাকে এ বন্দর দিয়ে। বছরে এ বন্দর দিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকার মালামাল আমদানি ও আট হাজার কোটি টাকার রপ্তানি হয়ে থাকে।
"