নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ জুন, ২০২২

রেলের আধুনিকায়নে ৩০ বছরের পরিকল্পনা

রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে জনবান্ধব ও আধুনিকায়নে ৩০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সরকার। এ পরিকল্পনা ৬টি পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য ৫,৫৩,৬৬২.০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৩০টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর আওতায় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে দেশের সব জেলা রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় চলে আসবে। যে ছয়টি পর্যায়ে উন্নয়ন হবে, তা হলো- রোলিংস্টক প্রকল্প, সিগন্যাল এবং টেলকম প্রকল্প, ওয়ার্কস প্রকল্প, রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প, গেজ রূপান্তর প্রকল্প, ট্রেন পরিচালনায় সহায়তা প্রকল্পসহ অন্য প্রকল্প।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপের সিআইসিসি মিলনায়তনে ‘উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় রেলওয়ে : চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকারসমূহ’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, সড়কের তুলনায় রেলওয়ে একটি পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই পরিবহন মাধ্যম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও রেলসেবা জনগণের চলাচলের মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, রেলপথ সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান নূর এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার।

নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, একটি উন্নত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ব্যবস্থাকে ত্বরান্বিত করতে হবে। এজন্য ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নির্ধারিত যে প্রকল্পগুলো রয়েছে সেসব অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে সরকার বদ্ধপরিকর। আমরা রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা খাতকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত করতে চাচ্ছি। এ কারণে ডাক, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করব।

মন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ পেতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি যাত্রীবান্ধব উন্নত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে এবং উন্নত বিশ্বের মতো রেলব্যবস্থাকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে এগিয়ে নেওয়া হবে।

পলক বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েকে আরো বেশি প্রযুক্তি ও যাত্রীবান্ধব করার জন্য তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ নানা পরিকল্পনা নিয়েছে। এ খাতকে এগিয়ে নিতে পাবলিক ও প্রাইভেট সেক্টরকে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ফরহাদ জাহিদ শেখ।

প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান সরকার জনস্বার্থে রেলসেবার মান বাড়াতে ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ৭৯৮ কিমি. নতুন রেললাইন নির্মাণ, ৮৯৭ কিমি ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ, ৮৪৬ কিমি বিদ্যমান রেললাইন পুনর্বাসন, ৯টি গুরুত্বপূর্ণ রেলসেতু নির্মাণ, লেভেলক্রসিং গেটসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আইসিডি নির্মাণ, ওয়ার্কশপ নির্মাণ, ১৬০টি নতুন লোকোমোটিভ, ১৭০৪টি যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ, আধুনিক রক্ষণাবেক্ষণ যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, ২২২টি স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থার মানোন্নয়ন, নতুন আইসিডি নির্মাণসহ রেলওয়ে ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্র্যাক, সিগন্যালিং, রোলিং স্টক, রক্ষণাবেক্ষণ ও মানবসম্পদে পরিকল্পিত বিনিয়োগের মাধ্যমে রেলের সম্ভাবনাকে ব্যবহার করতে এই খাতকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে পরিকল্পনা করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close