সুশান্ত বর্ণিক (কোটালীপাড়া) গোপালগঞ্জ
কোটালীপাড়ায় চড়কপূজায় মেলা
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে স্বর্গীয় হারাধন হালদারের স্মৃতিচারণ উপলক্ষে নলুয়া মাঠে চড়ক পূজা ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়। গত শুক্র ও গতকাল শনিবার দুই দিন মেলার আয়োজন করা হয়।
করোনা মহামারির কারণে টানা দুই বছর গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। কমেছে করোনার সংক্রমণ, স্বাভাবিক হয়েছে সবকিছু। তাই দুই বছর পর আনন্দের সীমা নেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের। আয়োজন করা হয়েছে চড়ক পূজা ও মেলার। চড়ক পূজা ও গ্রামীণ মেলায় ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। পা ফেলার জায়গা ছিল না। ঢাকঢোল বাজনার সঙ্গে উলুধ্বনি, সময়টা ছিল খুব ভালো।
গত শুক্রবার সকাল থেকেই বাহারি সব দোকানপাট নিয়ে বসে রয়েছে মেলায় দোকানদাররা। সন্ধ্যার আগে চড়ক ঘোরানো হয়। চড়ক ঘোরার আগে গাছে পূজা করা হয়। এই পূজাকে বলা হয় চড়ক পূজা। পূজার পর পর?ই দুই থেকে তিনজনকে একই সঙ্গে পিঠে ফোড়ানো হয় বড়শি দিয়ে। চড়ক গাছে ঘোরানো হয় তাদের। পিঠে বড়শি ফুঁড়িয়ে ঘোরা দেখার জন্য উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জমে দর্শনার্থীদের ভিড়।
মেলায় আসা অরবিন্দু দত্ত বলেন, আমি এই মেলায় প্রতি বছর আসি। গত দুই বছর মেলা হয়নি। এ বছর মেলা হওয়ায় ভালোই লাগছে।
চড়ক গাছ ঘোরা দেখতে আসা বিভুতি বিশ্বাস বলেন, দুই বছর পর মেলায় এসে ভালো লাগছে। আবারও সেই পুরাতন ভিড়, সেই চড়ক গাছ ঘোরানো, খুব আনন্দ পাচ্ছি। মেলা যেন প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় এটাই সবার কাছে দাবি।
চড়ক পূজার আয়োজক কমিটির সদস্য বিপুল কান্তি বিদ্যুৎ মজুমদার বলেন, নলুয়া হালদার ভবনের হারাধন সাধু এই চড়ক পূজা ও মেলা প্রচলন করেন। মেলা বৈশাখ মাসে হ?ওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ধান কাটার কারণে এক মাস পিছিয়ে জ্যৈষ্ঠ মাসে অনুষ্ঠিত হলো। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দুই বছর করোনার কারণে মেলা স্থগিত ছিল। এ বছর করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হ?ওয়ায় মেলা পুনরায় শুরু হয়েছে। এই মেলায় হাজার হাজার দর্শকের সমাগম ঘটে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে তাহলে প্রতি বছর চড়ক পূজা উপলক্ষে মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি সুনীল মাঝি বলেন, গত ৫০ বছর এই চড়ক পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিগত দুই বছর করোনার কারণে মেলা বন্ধ ছিল। এ বছর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হ?ওয়ায় আবার চড়ক পূজা ও মেলা শুরু হয়েছে।
"