প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২২ মে, ২০২২

বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন

দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড়সহ ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। গত শুক্রবার রাতের এ ঝড়ে গাছপালাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে গাছ ও দেয়ালচাপায় বগুড়ায় দুজন ও ঝিনাইদহে বজ্রপাতে একজন মারা গেছেন। এদিকে মহেশখালীতে ঝড়ে স্কুলঘরের চাল ভেঙে সাত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

বগুড়া : বগুড়ায় ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাতে পুরো জেলার ওপর দিয়ে ঝড়ে এ ক্ষতি হয়। প্রচণ্ড গতির ঝড়ে ইরি-বোরো ধানসহ গাছপালা ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে গাছ ভেঙে ও মাটি ধসে দুই উপজেলায় দুই ব্যক্তি মারা গেছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার পরে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। ঝড়ের সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। ভোররাত ৪টা থেকে ৪টা ৪ মিনিট পর্যন্ত ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৬ দশমিক ৬ কিলোমিটার, যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ গতিবেগের ঝড়। এছাড়া রাতে ঝড়ের সঙ্গে জেলায় ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বগুড়া আবহাওয়া অফিস।

আদমদীঘি (বগুড়া) : আদমদীঘির সান্তাহারে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি কালবৈশাখী ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছের কারণে আটকে যায়। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশনের ছাতিয়ানগ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এর আগে শুক্রবার রাতে প্রচণ্ড ঝড়ের কারণে রেললাইনের উপর গাছ ভেঙে পড়লে এই প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। প্রায় ১ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় শনিবার ভোরে কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে সারা দেশের সঙ্গে আলমডাঙ্গার রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর আবার তা স্বাভাবিক হয়। ঝড়ের তাণ্ডবে রেললাইনের ওপর গাছ উপড়ে পড়ায় সাময়িক এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। আলমডাঙ্গার স্টেশন মাস্টার নাজমুল হুসাইন বলেন, শনিবার ভোরে হঠাৎ প্রচণ্ড বেগে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এতে আলমডাঙ্গা-হালসার মাঝে রেললাইনের ওপর অনেক গাছ উপড়ে পড়ে। তখন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সারা দেশের সঙ্গে খুলনার ট্রেন চলাচল। ওই সময় আলমডাঙ্গা স্টেশনে নকশীকাঁথা এক্সপ্রেস ও কিছু দূরে কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে ছিল। কুষ্টিয়ার হালসা স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ও পোড়াদহ স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস।

কক্সবাজার : মহেশখালীতে ঝড়ে পূর্ব হরিয়ারছড়া বঙ্গবন্ধু বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আধা-পাকা স্কুলঘর ভেঙে অন্তত সাত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় প্রতিদিনের মতো স্কুলের ক্লাস চলাকালীন এই ঘটনা ঘটে। এতে আহত প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থী মুনতাহার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহত বাকি শিক্ষার্থীদের স্থানীয়ভাবে ও মহেশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো : মাত্র এক ঘণ্টারও কম সময়ের টানা বৃষ্টিতে আবারও নিমজ্জিত হয়েছে নগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা। গতকাল শনিবার ভোরে হালকা বৃষ্টি হলেও সকাল ৮টার পর প্রায় ৪০ মিনিট টানা বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বয়ে যায়। এতে নগরীর ষোলশহর ২নং গেট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, কাপাসগোলা, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক, গোসাইলডাঙ্গা, চাকতাই প্রভৃতি এলাকায় কোথাও হাঁটু আবার কোথাও কোমর পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। প্রধান সড়কে পানি জমে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ। এসব এলাকার দোকানপাট, অনেক বাসাবাড়িতেও নালার নোংরা পানি ঢুকে পড়ে। নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী জানান, শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে ১০ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিন উপজেলা। বজ্রপাতে পশু ও মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৬টার দিকে হঠাৎ করেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। মুহূর্তেই বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় প্রচণ্ড ঝড়। এতে কালীগঞ্জ উপজেলার এনায়েতপুর, রঘুনাথপুর, পিরোজপুর ও খোসালপুরসহ ১০টি গ্রাম ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১০ মিনিট স্থায়ী হওয়া এই ঝড়ে বাড়িঘর, আম, কলা, ফসল, বিদ্যুতের পোল ও বিভিন্ন গাছ ভেঙে গেছে। ফলে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। একই সঙ্গে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার জোড়াদহ, মালিপাড়া, তৈলটুপিসহ কয়েকটি গ্রামে পান ও কলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) : হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সোনাই ও খাষ্টি নদী খনন কাজ দায়সারাভাবে করায় ২ দিনের বৃষ্টিতে নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। সোনাই ও খাষ্টি নদীর পাড় অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে। তাছাড়া নদীর অনেক জায়গা খনন না করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে নদীগুলোর নাব্যতা ফেরাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নদী খনন কাজ শুরু করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close