প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৩ মে, ২০২২

প্রথম কলাম

‘বাইপোলার’ সমস্যায় ভুগছেন না তো?

কখনো খুবই আনন্দিত, আবার কখনো বিষণœ। সহজ ভাষায় বলতে, দীর্ঘসময় ধরে একজন ব্যক্তির মুডের, আবেগের বা মানসিক অবস্থার বিপরীতমুখী পরিবর্তন ঘটতে থাকলে তাকে বাইপোলার ডিসঅর্ডার বলে বর্ণনা করে থাকেন চিকিৎসকরা। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কখনো কখনো দীর্ঘসময় ধরে বিষন্নতা বা মন খারাপের মধ্যে থাকেন।

বাইপোলার মানে হচ্ছে দুই মেরু। অর্থাৎ একজন ব্যক্তির মানসিকতার এক প্রান্তে থাকে উৎফুল্লতা, অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস প্রবণতা, যাকে চিকিৎসকরা বলেন ম্যানিয়া এপিসোড। রোগী অতিরিক্ত উৎফুল্ল থাকেন, কথা বেশি বলেন, অনেক সময় জিনিসপত্র বিলিয়ে দেন।

আরেক প্রান্তে থাকে বিষণœতা, যাকে চিকিৎসকরা বলেন ডিপ্রেশন এপিসোড। এই সময় তার কিছুই ভালো লাগে না, হতাশায় ভোগেন, দুঃখ বোধ প্রবল থাকে। অনেকের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাও দেখা যায়।

বাইপোলার ডিসঅর্ডার কেন হয় : বাইপোলার ডিসঅর্ডার ঠিক কোন কারণে হয়, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে এর পেছনে কয়েকটি উপাদান কাজ করে থাকতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০০ জন মানুষের মধ্যে অন্তত একজন জীবনের কোনো একটি পর্যায়ে বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগে থাকেন।

মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার বলেন, বিশেষত মস্তিষ্কে সেরোটোনিন, ডোপামিন, নরঅ্যাড্রেনালিন ইত্যাদি নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতা, স্বায়ুবিকাশজনিত সমস্যা, মানসিক রোগের ভুল চিকিৎসা ইত্যাদি কারণে বাইপোলার হতে পারে। সাধারণত তরুণ বয়সে এই রোগের প্রকাশ দেখা যায়। নারী ও পুরুষ- উভয়েরই এই রোগটি হতে পারে। একজন থেকে আরেকজনের সঙ্গে লক্ষণের পার্থক্য থাকতে পারে।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রতি ১০০০ জন মানুষের মধ্যে চারজন বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডারে ভুগছেন।

লক্ষণ : বাইপোলারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যেহেতু দুই ধরনের মুড বা আচরণ প্রকাশ করেন, তাই এর লক্ষণও দুই প্রকার বলা যায়। একই ব্যক্তির মধ্যে সময়ের ব্যবধানে এরকম পরস্পর বিপরীত আচরণ দেখা গেলে মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার বলছেন, এখন বাংলাদেশের প্রায় সব জেলা শহরেই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। কারো মধ্যে বাইপোলার ডিসঅর্ডারের লক্ষণ দেখা গেলে মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ‘আমরা বলি না, এটা একেবারে নিরাময় সম্ভব। তবে ডায়াবেটিস রোগের মতো নিয়মিত চিকিৎসার মধ্যে থাকলে এটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।’ সূত্র : বিবিসি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close