নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ অক্টোবর, ২০২১

চুলচেরা বিশ্লেষণে মিলছে মনোনয়ন

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী

তৃণমূল থেকে কেন্দ্রের কাছে পাঠানো তালিকায় অনেক ক্ষেত্রে যোগ্যদের নাম না থাকায় ইউপিসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত করতে চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ করছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা। এ কারণে প্রার্থী চূড়ান্ত করার জন্য গঠিত আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করেও সব এলাকায় নৌকার চূড়ান্ত প্রার্থী কে হবেন, তা নির্ধারণ করতে বেশ সময় লাগছে।

এদিকে, তৃণমূলের মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা এবং বঞ্চিত ত্যাগী-যোগ্যদের মধ্যকার মান-অভিমান ও অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে যোগ্য প্রার্থীর হাতে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিতে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার। দলটির একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দলীয় প্রধানের নির্দেশনা মেনে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিতে তাই আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বোর্ড সতর্কতা অবলম্বন করছে; এ কারণেও প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বিলম্বিত হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগে নেতা বেশি। প্রার্থীও বেশি। তাই প্রার্থিতা বেড়েছে এবং বৈঠকেও সময় বেশি লাগছে।’

গত বৃহস্পতি থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা ৩ দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার সংসদ মনোনয়ন বোর্ডের সভা হয়েছে। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা সভায় অংশ নিয়েছেন। সভায় উপস্থিত এক সূত্র জানিয়েছে, ইউপি নির্বাচনে স্থানীয় এমপি এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা তাদের নিজেদের প্রার্থীদের মনোনীত করতে চায়। একাধিক প্রার্থী হওয়ায় মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করতে হচ্ছে। গত শুক্রবার মনোনয়ন বোর্ডের সভা যখন বসেছিল, এত বেশি প্রার্থী থাকায় তাদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে সময় বেশি লাগার কারণে সভা মূলতবি করে গতকাল শনিবার ফের সভা শুরু হয়। কারণ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি- সাধারণ সম্পাদকরা নিজের প্রার্থীকে চেয়ারম্যান পদে দেখতে চান। সবার প্রার্থিতার গ্রহণযোগ্যতা এবং চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক করতে হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপের ৮৪৮ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান ৪ হাজার ৪৫৮ প্রার্থী। একই সময় সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের উপনির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হয়। এতে ১১ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেন। ১০ পৌরসভায় ৫৩ জন মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। একইসঙ্গে উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ১৯ জন।

জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সই করা সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী রেজুলেশনে প্রস্তাবিত প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম কিনতে পারার নির্দেশনা ছিল। পরে তৃণমূল নেতাদের রেজুলেশন পাঠানোর ক্ষেত্রে বিলম্বসহ নিজস্ব লোকদের নাম রেজুলেশনে অন্তর্ভুক্ত করে পাঠানোর বিভিন্ন অভিযোগ আসায় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের ক্ষেত্রে সবার জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করে ক্ষমতাসীন দলটি।

সভার বিষয়ে জানতে চাইলে বোর্ডে উপস্থিত এক সদস্য বলেন, মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করে দেওয়া হচ্ছে। করোনা মহামারিকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন- তাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এবার শিক্ষিত অনেক নেতা ইউপিতে চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। আমরা চেষ্টা করছি এসব নেতাকে মূল্যায়ন করতে। উচ্চশিক্ষিত নেতারা তৃণমূলে মনোনয়ন পেলে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে।

জানতে চাইলে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘প্রার্থীদের হালকাভাবে দেখা হচ্ছে না। গভীরভাবে তাদের বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে- যাতে করে ত্যাগীরা বাদ না পড়ে এবং সুবিধাবাদীরা মনোনয়ন না পায়।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close