মো. শাহ আলম, খুলনা
আজ খুলনার ৩৪ ইউনিয়নে ভোট
খুলনার ৫টি উপজেলার ৩৪ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ আজ। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এর আগেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপারসহ ভোটসামগ্রী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়ও সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এ দিকে, নির্বাচনে চেয়ারম্যান এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিলে এবার খুলনা জেলায় ২ হাজার ১০১ জন প্রার্থী চূড়ান্ত লড়াইয়ের মাঠে রয়েছেন। আজ সোমবার রাতের মধ্যেই ফল প্রকাশে জানা যাবে সর্বশেষ কাদের মুখে ফুটবে বিজয়ের হাসি।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে খুলনার পাঁচটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে দিঘলিয়া, বটিয়াঘাটা, দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছা। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১৫৬ জন, ৩০৬টি ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য পদে ১ হাজার ৪৮১ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৪৬৪ জন প্রার্থী লড়ছেন। ইউনিয়নগুলোতে ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ ৪০ হাজার ৭৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৬ ও নারী ৩ লাখ ২৩ হাজার ৩৮৩ জন।
খুলনা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা এম মাজহারুল ইসলাম বলেছেন, প্রতিটি কেন্দ্রে ৫ জন পুলিশ, ১১ থেকে ১২ জন আনসার-ভিডিপি দায়িত্ব পালন করবেন। উপজেলায় চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। তাছাড়া জরুরি প্রয়োজনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের ব্যবস্থা থাকবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য সার্বক্ষণিক তদারকি রয়েছে। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটসামগ্রী পৌঁছে গেছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, নির্বাচনে খুলনার বেশির ভাগ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে একই দলের বিদ্রোহী (বহিষ্কৃত) প্রার্থীদের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কারণ এবার বিএনপি দলীয়ভাবে অংশ নেয়নি। তবে কোন কোন ইউনিয়নে বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
জেলা পুলিশ ও রিটার্নিং কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি কেন্দ্রে পাঁচজন অস্ত্রধারী পুলিশ, ১১ থেকে ১২ জন আনসার সদস্য, একজন গ্রাম পুলিশ শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব নিয়োজিত থাকবেন। এ ছাড়া প্রতিটি উপজেলায় চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া থানায় রিজার্ভ ফোর্স থাকবে, জরুরি প্রয়োজনে অতিরিক্ত ফোর্স পাঠানো হবে ঘটনাস্থলে। তা ছাড়া র্যাব, গোয়েন্দা পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ কেন্দ্র পরিদর্শন করবে। খুলনা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না।
এ দিকে, নির্বাচনের এক দিন আগেই প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুলনা দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান এজেন্ট শেখ মাহমুদুল হাসান (৪৫) রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। গতকাল রবিবার দুপুরে উপজেলার চন্দনীমহল বাজার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
দিঘলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহসান উল্লাহ চৌধুরী বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকে অভিযান চলছে। এলাকায় এখন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে দিঘলিয়া, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা, কয়রা ও দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর প্রতিপক্ষের হামলা-পাল্টাহামলা ও মামলাসহ হুমকি-ধামকির ঘটনা ঘটেছে।
"