নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

দেশের তরুণদের আগ্রহ তৈরি করতে হবে

কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জনপ্রিয়তা বাড়াতে বছরজুড়ে প্রচার কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে শিক্ষা অধিদপ্তর। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কারিগরি সহায়তায় স্কিলস-২১ প্রকল্পে এ কর্মসূচির একটি কৌশলপত্র তৈরি করেছে। এ প্রকল্পের মূলকথা হচ্ছে দেশের যুবশক্তিকে কারিগরি শিক্ষাগ্রহণে আগ্রহী করে তুলতে হবে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এ সংক্রান্ত এ তথ্য জানানো হয়। দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল-কলেজসহ অন্যান্য কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, চিফ ইনস্ট্রাক্টর এবং কারিগরি শিক্ষা বিভাগ ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কর্মশালায় অংশ নেন।

এ কর্মশালায় মাঠ পর্যায়ে ব্যবহার উপযোগী প্রচার উপকরণ, মাধ্যম ও কর্মপরিকল্পনার উদ্বোধন করেন কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষায় তরুণদের আগ্রহ তৈরি এ মুহূর্তের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। উন্নত দেশের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশেও আজকাল কারিগরি শিক্ষার প্রসার নিয়ে গবেষণা চলছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকারও এটি অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছে। আমরা চাই, আরো বেশি সংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থীরা কারিগরি শিক্ষায় আকৃষ্ট হয়ে দক্ষ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহায়ক হয়ে উঠুক’।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন বলেন, প্রচার কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো, উপযুক্ত মাধ্যম ব্যবহার করে অভীষ্ট জনগোষ্ঠীর কাছে সুনির্দিষ্ট বার্তা পৌঁছে দেওয়া যেমন- দক্ষতা প্রশিক্ষণ, চাকরির সুযোগ ও শোভন কর্মসংস্থান। তরুণরা যেন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে যুক্ত হওয়ার পথ খুঁজে নিতে পারেন। করোনাপরবর্তী পৃথিবীতে এটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

কর্মশালায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব কো-অপারেশন মরিজিও সিয়ান জানান, বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার পুনর্গঠনে ২০০৭ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাজ করছে। জাতীয় দক্ষতা নীতি ২০১১, কারিগরি শিক্ষা কাঠামো, কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে অর্থায়ন করা হয়েছে। কারিগরি শিক্ষার ব্যাপ্তি, কার্যকারিতা, প্রেক্ষাপট বিষয়ে তরুণদের স্পষ্ট ধারণা দিতে কার্যকর প্রচার কর্মসূচির তাগিদ দেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি।

কর্মশালায় অন্য বক্তারা বলেন, দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এ মুহূর্তে জনমিতির লভ্যাংশের সর্বোচ্চ ব্যবহার কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তার তাগিদ অনুভব করছে। প্রতি বছর শ্রমবাজারে ঢুকছেন অন্তত ২০ লাখ তরুণ। তাদের দক্ষ জনগোষ্ঠীতে পরিণত করতে কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের মান বাড়ানের দিকে গুরত্ব দেন বক্তারা।

কর্মশালায় জানানো হয়, দেশজুড়ে বিশদ কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পাইলট কর্মসূচি শুরু হচ্ছে সিলেট টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। এর পরের কর্মসূচি রয়েছে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং গাইবান্ধা টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে। এই প্রচার কর্মসূচির কৌশল চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ের তথ্য ও সুপারিশ সমন্বিতভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। সিলেট, রাঙামাটি ও গাইবান্ধার তিনটি প্রতিষ্ঠানে কর্মসূচির প্রথম অংশ আয়োজনের পরে যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হবে তার ভিত্তিতে স্কিলস-২১ প্রকল্পের আরো চারটি অংশীদার প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে কর্মসূচির পরবর্তী অংশ। মাঠ পর্যায়ে সব ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে আয়োজন করা হবে আরো একটি কর্মশালা। সেখানে কৌশলপত্রটি আরো নিখুঁত করে তোলার জন্য কাজ করবেন সংশ্লিষ্টরা। এরপর দেশজুড়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে প্রচার কর্মসূচি হিসেবে কৌশলপত্র বাস্তবায়ন করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close