সিলেট প্রতিনিধি

  ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

জাফলংয়ে নিষিদ্ধ জোনে বালু লুটের মহোৎসব

সিলেটের জাফলংয়ে ‘নিষিদ্ধ জোন’ থেকে অবাধে চলছে বালু লুট। বালুখেকোরা বোমা ও ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার বালু লোপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। নদীতে চলে যাচ্ছে কায়েম এলাকা। অবৈধ বোমা মেশিনের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের লোক-দেখানো অভিযানে কাজে আসে না। বালুখেকোদের তা-ব থেকে পর্যটন স্পট জাফলংকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে অবগত পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাও। স্থানীয় প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাও এর সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করছেন তারা। গতকাল শনিবার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে স্থানীয় জাফলং নয়াবস্তি গ্রামের বাসিন্দা খোকন মিয়া সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, ৮-৯ বছর আগে জাফলং পর্যটনস্পট, পাথর ও বালুমহালসহ প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকাকে পরিবেশ সংকটাপন্ন বা ইসিএ জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, ওই এলাকা থেকে বালু ও পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে হাইকোর্ট। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বালুখেকো চক্রের সদস্যরা প্রতিদিন অবাধে বালু লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।

খোকন বলেন, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকে প্রতিদিন ১৫-২০ লাখ টাকা করে গত ৩ মাসে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বালু লুট করা হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার বালুবাহী কার্গো নৌকা চলাচলের কারণে জাফলং ব্রিজ, গোয়াইনঘাট ব্রিজ, সালুটিকর ব্রিজসহ শত শত কোটি টাকায় নির্মিত সেতু হুমকির মুখে পড়েছে। বালুখেকো চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডৌবাড়ি এলাকার লামা দোমকা গ্রামের বাসিন্দা সুভাস দাস, লেঙ্গুরা গ্রামের মুজিবুর রহমান, মামার দোকান মেলার মাঠের বাসিন্দা ইমরান হোসেন সুমন ও বিশ্বনাথের ফয়জুল ইসলাম ও আসামপাড়া গ্রামের শামসুল আলম।

খোকন আরো বলেন, গোয়াইনঘাট উপজেলায় শুধু সালুটিকর ব্রিজের উজানে গোয়াইন ১১৭ নামের একটি বৈধ বালুমহাল এবার ইজারায় দেওয়া হয়েছে। সালুটিকর ব্রিজের উজানে নন্দিরগাঁও এলাকায় ওই বালুমহালের অবস্থান। কিন্তু বালুখেকো চক্রটি ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকেও বালু লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযান চালালেও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। চক্রটি সংরক্ষিত এলাকা থেকে বালু নিয়ে কার্গো নৌকায় পাচার করছে। প্রতিটি নৌকা থেকে রয়্যালটিসহ লাইন দেওয়ার নামে বালু ফুটপ্রতি ৬ টাকা আদায় করছে। এমনকি ছাতক পর্যন্ত কার্গো বের করে দিতে প্রতি কার্গো থেকে ৫-৬ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে বোমা মেশিন ধ্বংস ও নৌকা জব্দ করেছি। আমাদের একার পক্ষে সম্ভব না। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। বালুখেকোদের তা-ব থামাতে সবার দায়িত্ব রয়েছে।

এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close